চায়ের দোকানে মিস্টার মিত্রর আত্মা

ছোটগল্প

।। অলোকপর্ণা ।।

“আমি প্রতিদিন এখানে আসবো। পেপার পড়বো। তোমাদের সাথে আলোচনা হবে খেলা, রাজনীতি, সমাজ, সমাজের বেবুশ্যেদের নিয়ে। আমি প্রতিদিন সকালে সিলিং থেকে নেমে চায়ের দোকানে আসবো। চায়ের দোকান কোথাও যাচ্ছে না। চায়ের দোকান শাশ্বত। আর মৃত মানুষের মৃত্যু নেই।”

চায়ের দোকানে মিস্টার মিত্রর আত্মা

মিস্টার মিত্র যতক্ষণে নিজেকে আবিষ্কার করলেন, ততক্ষণে অনেকটা দেরি হয়ে গেছে। তাঁর পায়ের দুটো পাতাই এখন ভাঙা। ঘাড়টা নেতিয়ে আছে বাঁদিকে। জিভ ঝুলে আছে বুক অবধি প্রায়। তবুও তাঁর ভিতরে ভিতরে নিজেকে বাঁধনমুক্ত করার একটা ফুরফুরে তাড়না জন্মালো। তিনি বিস্মিত হলেন। তারপর ধীরে ধীরে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে লাফ দিলেন মাটিতে।

মেঝেতে পা ফেলা মাত্র তাঁর মনে পড়ে গেল নীল আমস্ট্রং-এর ঐতিহাসিক উক্তি, “one small step for a man, one giant leap for mankind. “

সিলিং থেকে নিচে নেমে আসার মধ্যে কি ঐতিহাসিক কোনো ব্যাপার আছে?— ভেবে পেলেন না।

একটু দূরেই কাঠের টুলটা পড়ে আছে। তাঁর যখন তেরো বছর বয়স, তখন এই কাঠের টুল জন্মায়। তাঁর বাবা সিনিয়র মিস্টার মিত্র মনে করেছিলেন, পড়াশোনায় মন বসলে বাথরুমে কম সময় কাটবে, স্বাস্থ্যহানি ঘটবে না। তাই একদিন গোপাল ফার্নিচারের দোকান থেকে দুপুরবেলা একটা চারপায়া টেবিলের পিছু পিছু তিনপায়া শিশুকাঠের এই টুল তাঁর পড়ার ঘরে প্রবেশ করেছিল। চেয়ার নয়, টুল— বহু উদ্দেশ্যপূর্ণ। বাবার তৈরি করে দেওয়া টেবিল কালক্রমে ভেস্তে গেলেও টুল দীর্ঘজীবী হয়েছে। মিস্টার মিত্র প্রথমে মাটিতে লুটিয়ে থাকা টুলটাকে দেখলেন। তারপর তাকে সোজা করে দাঁড় করালেন। কেমন একটা অপরাধবোধ হল তাঁর টুলটার প্রতি। কী যেন কথা ছিল, অথচ রাখা হয়নি। মনে মনে মাফ চাইলেন আর হাত বুলিয়ে দিলেন তার গায়ে। টুলকে আরাম পেতে দেখলেন তিনি। পরক্ষণেই গলার যন্ত্রণাটা জানান দিল। তাঁর মাথাটা এখনো একদিকে নেতিয়েই আছে। যেন সঙ্গমক্লান্ত পুরুষাঙ্গ।

মানুষের মস্তিস্ক সঙ্গমে কতটা অংশগ্রহণ করে? ভাবনাটা তৈরি হলে মিস্টার মিত্র বিরক্ত হলেন। এসময় এসব মানায় না। তবে কী মানায়? ধম্ম কম্ম? ঠাকুরের নাম?

তাঁর দুহাতের নখ উপড়ে উঠে এসেছে।

মিস্টার মিত্র নিজেকে বাথরুমে নিয়ে এলেন। বেসিনের কল খুলে নখে জমে থাকা রক্ত ধুয়ে ফেলার চেষ্টা করলেন কিছুক্ষণ। তারপর সবকিছুই অনর্থক মনে করে বেসিনের উপরে লাগানো আয়নার দিকে তাকালেন। গলায় কড়া করে একফালি দাগ পড়েছে। মিস্টার মিত্র সেই দাগের উপর হাত বোলালেন। কুকুরের গলায় বছরের পর বছর ধরে এঁটে বসে থাকা বকলেসের মতো একটা গোল, পাকা দাগ। গতকাল জন্মেছে, অথচ মনে হচ্ছে বছরের পর বছর দাগটা এখানেই ছিল। কার গোলামী করেছেন মিস্টার মিত্র এতকাল? এখনো করে চলেছেন?

তিনি বুঝলেন, একথা কাউকে জানানো প্রয়োজন।

বাইরে সকালের চড়া আলোয় চায়ের দোকান ফুটে আছে। তাতে উড়ে উড়ে এসে বসেছে চাপাপী। মিস্টার মিত্র ভাঙা পায়ে গিয়ে বসলেন চায়ের দোকানের এককোণায়। এখানে সবাই জানে সকলে সঠিক, তবু সংশয় থেকে যায়, তাই কথায় কথায় পাশের জনকে সময় জিজ্ঞেস করার মতো করে সকলে জেনে নেয়, “ঠিক কিনা?” সম্মতি পেলে আবার নিজেকে জাহির করে। এভাবে চায়ের দোকান সোমত্ত হয়ে ওঠে।

তাঁর গলার দাগটা সবার প্রথমে খেয়াল করলো বিশু। বিশুর ট্রাম এখন শ্যামবাজার থেকে এসপ্ল্যানেড অবধি গিয়ে থেমে যায়। “গলায় ওটা কীসের দাগ মিত্র দা? সব ঠিক আছে তো?”
“আমি গতকাল রাতে মারা গেলাম”
চায়ের দোকানের প্রতিটা মুখ চমকে তাঁর দিকে ফেরে। তারপর অবিশ্বাসের হাসি হেসে ওঠে।
মিস্টার মিত্র বলেন, “কাল রাতে আমি গলায় দড়ি দিয়েছি”
বিশু বলে, “তারপর?”
“তারপর আজকে সকালে, একটু আগে, সিলিং থেকে নেমে এলাম…”
“এই মিত্রদাকে একটা কড়া করে দাও তো, পেট গরম হয়েছে মনে হচ্ছে, দাদা পাউরুটি খাবেন? ঘুগনি দিয়ে?”
“বিশু, আমি সত্যিসত্যি কাল রাতে শিশুকাঠের টুল আর ছাদে জামা মেলার নাইলনের দড়ি একজোট করে ঝুলে পড়েছিলাম। আজকে সকালে আবার নেমে এসেছি।”
বিশু চুপ করে চায়ের গ্লাস মুখে ঠেকায়। তারপর সিগারেট এগিয়ে দিয়ে বলে, “সিগারেট খাবেন?”
“দেখো আমার জিভ কেমন লম্বা হয়ে গেছে,” বলে জিভ বের করে দেখালেন মিস্টার মিত্র। “আমার গলার দাগ তো দেখছই, আমার পায়ের পাতা দেখো, হাতের নখগুলো দেখো… বিশু আমি সত্যিই মরে গেছি, আমি একেবারে মৃত।” বলে মিস্টার মিত্র বিশুর একটা হাত ধরে নিজের গায়ে স্পর্শ করালেন।
ট্রামচালক বিশু শিউরে উঠল ঠান্ডায়। বিশুকে ভয় পেতে দেখে তিনি সঙ্গে সঙ্গে বললেন, “ভয় নেই, আমি ক্ষতিকর নই!”

মিস্টার মিত্র টের পেলেন একথা বললেও, বিশুর নজর এখন বদলে গেছে। আগে অবলীলায় সিগারেট এগিয়ে দিত, এখন কুন্ঠা বোধ করছে।
বিশুকে সহজ করতেই, মিস্টার মিত্র আর পাঁচটা সকাল যেন, উপরন্তু সকাল যেভাবে হয় সেভাবে সিগারেটটা ধরালেন। বাতাসে ধোঁয়া ছুঁড়ে দিয়ে বললেন, “হ্যাঁ, যা বলছিলাম, ব্যাপারটা মন্দ নয়।”
বিশুর পাশ থেকে জগৎ জিজ্ঞেস করলো, “মৃত্যু? না বেঁচে থাকাটা?”
“কোনোটাই মন্দ নয়, দেখো, আমার এমন দিনও গেছে যখন আমি তিনবেলা আধপেটা ছিলাম। তোমরা তো জানোই, মাধ্যমিকের আগে বাবা মারা গেলেন, শোক সহ্য করতে না পেরে মা শয্যাশায়ী হলেন দুমাসের মধ্যে। আমার পর দু দুটো বোন, এক ভাই। সবার বিয়ে দিতে দিতেই চল্লিশ পার করে দিলাম। নিজে যখন ছাদনাতলায় এসে পৌঁছালাম ততক্ষণে অনেকটা দেরি হয়ে গেল। তোমাদের বৌদিকে…” এই অবস্থায় চা দোকানের অনেকেই মিস্টার মিত্রর কথা মন দিয়ে শুনছেন, “… তোমাদের বৌদিকে অল্পবয়সে জরায় ধরলো, তিনিও আমার মায়ের মতো শয্যা নিলেন বছর দশেক আগে, তারপর ধীরে ধীরে, কীসের কে জানে, শোকে তাপে সরু হয়ে গিয়ে, যেভাবে মোমবাতি নিভে যায়, সেইভাবে ধৈর্য ধরে এত নিপুন ভাবে নিভে গেল, যে, তার কোনো চিহ্ন আর থাকলো না কোথাও।”

জগৎ জিজ্ঞেস করল, “আপনি মারা গেলেন কেন মিত্রদা? আপনার কি আর বাঁচতে ইচ্ছে করছিল না?”
“ব্যাপারটা ঠিক তা নয়। দেখো, সবকিছুরই মেয়াদ থাকে, তাই না?” বলে চুপ হয়ে গেলেন মিস্টার মিত্র।
“এখন কেমন লাগছে দাদা?” যে জিজ্ঞেস করল তাকে চিনতে পারলেন না মিস্টার মিত্র, বললেন, “না টক না ঝাল না নোনতা না মিষ্টি। অকারণে জল খেলে যেমন লাগে ঠিক তেমন।”
“তৃপ্তি পাচ্ছেন? অভাব ছিল?”
“ওসব কিছু না। মনে হচ্ছে শুধু শুধু এক গ্লাস জল খেলাম, এই।”
“মানে জল খেলে যেমন লাগে, মরার পর তেমন লাগে?”
“আরে না, উনি বলছেন, পুরো ব্যাপারটাই তেষ্টা ছাড়া অহেতুক জল খাওয়ার মতো। না টক। না ঝাল। না নোনতা। না মিষ্টি।” পাশ থেকে অপরিচিত ছেলেটা বলল।
চায়ের দোকানের সবাই চুপ করে ভাবতে লাগলো অহেতুক এক গ্লাস জল খেলে কেমন লাগে।
দোকানের মালিক, রিফাত বলল, “দাদা, মরতে ভয় নাই তালে?”

রিফাতের ছোট ছেলে রক্তের দোষে বিছানায় পড়ে আছে আড়াই বছর হল। ডাক্তার বলেছে সে আর কোনোদিন উঠে বসবে না, দাঁড়াবে না, ছুটবে না। তার অল্পবয়সী হাড়গুলো ভেঙে গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে যাবে নাহলে। এই অবস্থাতে ছেলেটার যখন সতেরো আঠারো বছর বয়স হবে, তখন সে এমনি এমনিই একদিন মরে যাবে, যেভাবে ফুল ঝরে যায়, তেমন নিজে থেকেই। তার কথা মনে করে রিফাত আগে থাকতে জেনে নিতে চাইল, “দাদা, তালে মরতে ভয় নাই?”
“টুলের উপর উঠে গলায় ফাঁস পরলাম যখন, তখন ভয়ের কথা মাথায় আসেনি। এলে হয়তো নেমে আসতাম টুল থেকে।”
বিশু জিজ্ঞেস করল, “কী ভাবছিলেন তবে?”
“ভাবিনি কিছু। দড়িটা দেখছিলাম। ফ্লুরোসেন্ট সবুজ রঙের। ছোটবেলায় বর্ষায় এই রঙ তুলসিগাছের পাতায় দেখেছি অবিকল।”
“ছোটবেলার কথা ভাবছিলেন?” এত কিছুর পরেও জগৎ আশার আলো খুঁজছে বুঝে মিস্টার মিত্র চুপ করে গেলেন। ইচ্ছে হল না, জগতের ভুল ভাঙাতে।
“এখন কেমন লাগছে আপনার? খিদে পাচ্ছে? ঘুম? ক্লান্তি? মেডিকেল সায়েন্স তো আপনাকে লুফে নেবে এবার!” বিশুর গলায় উচ্ছ্বাস ফুটে ওঠে।
“আমি জানিনা আমার কেমন লাগছে। খিদে ঘুম ক্লান্তি শব্দগুলো জানি, কিন্তু চিনি না যেন। আমার ভিতরে একটা ঘন কালো গোলক ঢুকে বসে আছে। স্বাদহীন, গন্ধহীন, অখণ্ড।”
“গোলা? কামানের গোলা?”
“হতে পারে, ফাটার অপেক্ষায় আছে।”

বিশুরা সব ভয়ে ভয়ে সরে বসলো। মিস্টার মিত্র ঘাড় কাত করে পৃথিবী দেখছেন। সবই একই আছে। কোথাও কিচ্ছু বদলায়নি। কোথাও কিছু বদলাবে না এমন পণ করে আছে যেন। দাঁতে দাঁত চেপে আছে।
“মিত্র দা, আমি শুনেছি ওরা বলে আত্মা অবিনশ্বর। শুধু রূপ বদলায়। তার সৃষ্টি নেই। ধ্বংস নেই। আপনার কী মনে হয়?”
“আমার মনে হয় সবকিছুরই মেয়াদ আছে, এই রূপ বদলানো, এরও তো শেষ দরকার। এও তো কাহিল হয়, না কি? রেহাই দরকার। খালাস হওয়া প্রয়োজন। তবে আমিই বা কতটুকু জানি, সবেমাত্র সিলিং থেকে নেমে এলাম…”
“আপনি কি তবে এখন ভূত?” অপরিচিত ছেলেটা জিজ্ঞেস করে।
“কী জানি ভাই। শুধু জানি, আজ সকালে আমি সিলিং থেকে নেমে এসেছি। এর আগে যা যা ঘটেছে তার সাথে আজ সকালের কোনো পার্থক্য  নেই। প্রতিটি দিন সমান। ইঞ্চি বরাবর মেপে কাটা।”
“একটা প্রশ্ন ছিল দাদা, শুনেছি অপঘাতে মৃত আত্মা মানুষের ঘাড়ে চাপে,” খেলাচ্ছলে প্রশ্নটা এলেও মিস্টার মিত্র বুঝলেন একটা চাপা ভয় মাথাচাড়া দিয়ে উঠল চায়ের দোকানে।
“একে অপঘাত বলা হবে কি? মানে উনি তো পরিকল্পনা করেই যা করার করেছেন,” বিশু বলে।

মিস্টার মিত্র চুপ করে ভাবতে থাকলেন, কোনো প্রতিশোধস্পৃহা বা ক্রোধ তাঁর ভিতরে খুঁজে পেলেন না। “না ভাই, আমার তো সব একইরকম লাগছে। কিছুই বদলায়নি একচুল। শুধু আমার ঘাড়টা সোজা হচ্ছে না। পায়ের পাতা ভেঙে আছে। আর জিভটা,” লকলক করা জিভ বের করে দেখালেন তিনি বাকিদের।
চায়ের দোকানের সবাই আবক্ষ ঝুলে থাকা জিভের দিকে তাকিয়ে। জগৎ বলল, “দাদা, মুখ বন্ধ করতে অসুবিধা হচ্ছে না?”
“মুখ বন্ধ করছি না তো, খোলাই থাক, কীই বা হবে, দুয়েকটা মাছি মশা এখন পেটে গেলেই বা কী!”
সবাই চুপ করে চায়ের কাপে চুমুক দিল।
মিস্টার মিত্র ঝুলে থাকা মাথার বাঁকাচোখ দিয়ে দেখলেন আরেকটা দিন বেড়ে উঠছে চোখের সামনে, “তোমাদের আজ কাজ নেই? না কি আজ কোনো জাতীয় ছুটির দিন? আজ কি কারো জন্মদিন? আজ কি কারো মৃত্যুদিবস?”
কাজ সংসারের কথা মনে পড়তে সবাই নড়েচড়ে বসে। বিশু বলে, “উঠতে হবে এবার মিত্র দা, আপনি কী করবেন এখন? এখানে থাকবেন, না ফিরে যাবেন?”
“দেখি গো…”
“আজ উঠি দাদা, আপনি কাল আসবেন তো?” অপরিচিত ছেলেটি বলতে বলতে উঠে দাঁড়ায়।

মিস্টার মিত্র চায়ের দোকানের বাকিদের দেখেন, সবাই তাঁর জবাবের অপেক্ষায়। “হ্যাঁ, আসবো। আমি প্রতিদিন এখানে আসবো। পেপার পড়বো। তোমাদের সাথে আলোচনা হবে খেলা, রাজনীতি, সমাজ, সমাজের বেবুশ্যেদের নিয়ে। আমি প্রতিদিন সকালে সিলিং থেকে নেমে চায়ের দোকানে আসবো। চায়ের দোকান কোথাও যাচ্ছে না। চায়ের দোকান শাশ্বত। আর মৃত মানুষের মৃত্যু নেই।”

টাকা পয়সা মিটিয়ে চায়ের দোকান ছেড়ে আশ্বস্ত আত্মারা এরপর ধীরে ধীরে টাউনের পথে প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। দোকানের ছায়ায় বসে লম্বা জিভ মেলে মিস্টার মিত্র একটা লেড়ো বিস্কুটে কামড় বসান।

অলোকপর্ণা

পশ্চিমবঙ্গের তরুণ গদ্যকার, কথাসাহিত্যিক। নিজেকে অক্ষরশ্রমিক বলে থাকেন। কোলকাতায় জন্ম। পেশাগত কারণে বসবাস ব্যাঙ্গালোরে। দশটা-আটটায় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। প্রকাশিত বই- ‘ঝিঁঝিরা’ (২০১৫), ‘হাওয়াশহরের উপকথা’ (২০১৮), ‘দাস্তানগো’ (২০১৯) এবং ‘রণ বিশ্বাস কারো নাম নয়’ (২০১৯)।

Share