আজ রবিবার, ২১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ফেরা

ছোটগল্প

।। ফতেমা রিয়া ।।

মালকিনের যে প্রেমিকদের প্রতি অনাগ্রহ আছে তা না, তবে প্রেমিক অবশ্যই ধনী হওয়া বাঞ্চনীয়।
– ফকিরের লগে কিসের পিরিত? মালদার বেডা ধরবি, ভাবের জালে ফালাই দিবি, বেডারে খসাইবি।
কিছু কিছু মেয়ে বলে ওঠে, বেঈমানি করতারমু না। তখন মালকিন বলে, বেশ্যা বাড়ির মাগী হইয়া ভদ্দরলোকের ঘরের ছেড়ি গো মত বয়ান দিবি না। বেশ্যার আবার ঈমান! মাগী!

এহান দিয়া সর, মাগীর পোলা।

এই ধরণের গাল খাইতে সোহরাব অভ্যস্ত। সে কিছু মনে করে না। তবে এই ডাকে সিগন্যাল আছে, সিগন্যালটা হলো, আরেকজন আসার সময় হয়েছে, যদি আরো থাকতে চাও, আরও টাকা ফেলো।
এই বেশ্যাটা তাকে ভালবাসে, অথচ টাকার বেলায় এক চুল ছাড় দেবে না। এই ভালবাসার কী মূল্য?
সোহরাব উদাস হয়ে বিড়ি ধরায়।
-কিরে কথা কানে যায় না নটির পুলা?
সোহরাবের গালিগালাজ শুনতে ভাল লাগে। সে নীরব হয়ে থাকে।
মালতি বিবি ঘর ঝাড়ু দিতে ব্যস্ত। মনে মনে বলে,
– সব আচুদা শালা আমার ধারে আইয়া মরে। আসমা বিবির ঘরে এক বড়লোক বেডা আয়, ভাবের লোক, টাহার বেলায় কোন কিপ্টামি নাই, আসমা বিবিরে না ধইর‍্যা হাত ধইরা বইয়া থাহে, ভাবের কতা কয়। আর আমার ত মোহব্বত হইলো ফকিরের লগে।
সোহরাব ফকির তাতে তার নিজের কোন সন্দেহ নাই, সুতরাং এই অভিযোগ সে নিশ্চিন্তে মেনে নিলো। মালতি বিবি সোহরাবের নিশ্চিন্ত নীরবতায় বিরক্ত হয়, সে ভাত বাড়ে, এক থালা ভাত সোহরাবের সামনেও ফেলে দেয়।
– খাইয়া ভাগবি হারামি।
সোহরাব খুশি হলো, যে টাকা কামলা দিয়ে জোগাড় করেছিল, সব মালতি বিবিকেই দিতে হলো। আজ খাওয়ার টাকা ছিল না, কামলা দিতেও মন চাইলো না।
মালতি বিবি ঠিক বুঝল।
-বউ, তোরে খাওয়াইয়া দেই?
– এহ! বউ লইয়া আইছে! বেশ্যা কারোর বউ না। খাইয়া জাগা ফসসা কর। আরেক বেডা আইব।
সোহরাব বিষন্ন হয়, তার বিয়ে করার টাকা থাকলে সে ঠিক বিয়ে করে ফেলতো মালতি বিবিকে।

একবার ১০ হাজার টাকা নিয়ে চলেও আসলো, বিবি মুখ ঝামটা দিয়ে বললো, ফকিন্নির পোলার শখ কতো!সোহরাব বলতে চাইলো, ফকিন্নির পোলাগেরই শখ থাকে মেলা, কোনো শখই তো পূরণ হয় না।
বলা বৃথা, সোহরাব “বেশ্যা মাগী, তোর ত একশ ভাতার না হইলে হয় না” বলে গালি দিয়েই চলে আসলো। মনে তখন রক্তক্ষরণ।

সেদিন এক প্যাকেট বেনসন কিনলো, বড়লোকের বিড়ি, খেয়ে মোটেও স্বাদ পাইলো না। 
‘শালার বড়লোক আচুদার দল’ বলে বড়লোক আর তাদের ব্রান্ডকে কষে গালি দিয়ে এক বোতল বাংলা খাইতে খাইতে ঘুমিয়ে পড়লো।


সোহরাব চলে যাবার পর মালতি বিবি বিষন্ন হয়ে বসে রয়, আসলে নতুন কাস্টমার নাই তার। পাড়ায় নতুন কয়েকটা মেয়ে এসেছে বিক্রি হয়ে। তাদের খুব দাম পড়েছে। সোহরাব কাছে বসে থাকলে আরো আসে না। মালকিন তার ওপর বিরক্ত, ইচ্ছা করেই তার ঘরে পাঠায় না। মালকিনের যে প্রেমিকদের প্রতি অনাগ্রহ আছে তা না, তবে প্রেমিক অবশ্যই ধনী হওয়া বাঞ্চনীয়।
– ফকিরের লগে কিসের পিরিত? মালদার বেডা ধরবি, ভাবের জালে ফালাই দিবি, বেডারে খসাইবি।
কিছু কিছু মেয়ে বলে ওঠে, বেঈমানি করতারমু না। তখন মালকিন বলে, বেশ্যা বাড়ির মাগী হইয়া ভদ্দরলোকের ঘরের ছেড়ি গো মত বয়ান দিবি না। বেশ্যার আবার ঈমান! মাগী!

মালতি বিবির আগের মতো রূপ নাই, সাজলেও আর ভালোলাগে না নিজের কাছে। প্রায়ই অসুস্থ থাকে, অজান্তেই বুঝতে পারে, দিন শেষ হয়ে আসছে!

মালতি বিবির ডাকনাম ছিল মালা। বাবা গরীব কৃষক। মা দুপুর রাতে ঘরে আসত। কেন আসত তা সে বুঝত না। অবশ্য তার বাপের বউকে ভাত খাওয়ানোর মুরোদ না থাকলেও মার দেবার মুরোদ ছিল। মা প্রতিদিন মার খাইতো। প্রতিদিনই দেরি করত। যে ভাত মা নিয়ে আসত, সেই ভাতই বেশিরভাগ সময় খাইতে হইতো তাদের। তার দিনমজুর বাপ কাজে যাইতে আলসেমি করত, পাড়ার দোকানে গিয়ে সারাদিন আড্ডাবাজি, মাঝে মাঝে হাতাহাতিও লাগত।
একদিন এক লোক তার বাবাকে বলে বসলো, “বেশ্যা মাগির জামাই। বউ বেশ্যামি করে ভাত নিয়া আসে, খাস, লজ্জা নাই?”
তার বাবার মাথায় রক্ত চড়ে গেল!  দা নিয়ে ওই লোককে কোপাতে গেল!
এলাকায় সেদিন বিশাল সালিশ বসলো।
মাকে বেশ্যা, আর বাপকে অথর্ব বলে গ্রাম ছাড়া করা হলো।
মালা তখন ১২ বছরের মেয়ে। গায়ে গতরে কিছু নাই, কালো, টিনটিনে শরীর। ঘর হারা,বাস্তুহারা হয়ে পথে ঘুরে বেড়াতে বেড়াতেই এখানে কীভাবে যেন আশ্রয় হলো!

বাবা মাকে তার বেশি মনে পড়ে না, পড়লেও ঘৃণাই লাগে। মরে গেছে না বেঁচে আছে সে খবর নিতেও চেষ্টা করে নাই কোনোদিন। হয়তো ভিক্ষা করছে, হয়তো গাড়ি চাপা পড়ে মরে গেছে, হয়তো চুরি করতে গিয়ে গণধোলাই খেয়ে মরেই গেছে বাপটা, হয়তো মাটা ঢাকার রাস্তায় ১০ টাকায় শরীর বেচতেছে এখনো বুড়া বয়সে।


সোহরাব নতুন এক মেয়ের প্রেমে পড়েছে মনে হয়। মেয়ের নাম ময়না। যেখানে সে ইঁট টানে সেখানেই দেখা। এক মধ্যবয়সী নারীর সাথে ১৩-১৪ বছরের এক মেয়ে আসে। এই ধামড়ি মেয়েকে বাসা বাড়ির কাজে না লাগিয়ে মা কেন সাথে সাথে ঘুরায় ঠিক বুঝা গেল না। তাঁর মা ও এখানে ইঁট ভাঙে। মাঝে মাঝে মেয়েটাকেও কাজে লাগিয়ে দেয়।
একদিন মহিলাকে চামে চামে জিজ্ঞাসা করে ভেতরের খবর বের করে নিলো সোহরাব। শুনে সে অবশ্য বিষন্ন হয়ে উঠল। মেয়ে অতিরিক্ত সুন্দরী, কোথাও দিয়ে রাখতে পারে নাই, মেয়ে বার বার পালিয়ে আসছে, বস্তির বাসায় রেখে আসবে, তাও কুত্তার দলের যন্ত্রণায় শান্তি নাই।
– মোগো ভাই গরিব হইলেও ইজ্জত আছে, কি কও বেডা? ভালো পোলা পাইলে মাইয়াডারে বিয়া দিয়া দিমু।
শুনে সোহরাব একটু লজ্জা পায়। সে কি ভাল ছেলে?
-খোজে থাকলে কইও বেডা, ধামড়া মাইয়া নিয়া চলা অশান্তি, কুত্তার দলে বড়ই জ্বালা দেয়।
সোহরাবের মনে মনে বলে, আমারে দিয়া দেন আফনের পরীরে। 
কিন্তু বলার মতো সাহস হইলো না। তবে সাহস জোগাড় করতে সে কাজ করতে শুরু করলো। মাগীপাড়ায় সে যায় শুনলে ময়নার মা তার দিকে ফিরেও তাকাবে না। প্রতিদিন কাজে আসে। ময়নাকে দেখে। ময়নাও তাকায়, একদিন আড়াল পেয়ে ময়নার কাছে গেল সে।
– বিস্কুট খাইবা?
ময়না মাথা নাড়লো, সে বিস্কুট বের করে দিল।
– কিছু লাগলে আমারে কইবা।
ময়না আবারো মাথা নাড়লো।
কয়েকদিন পর নতুন ঘটনা আবিষ্কার করে সে বিষন্ন হল আবার। ময়না এখানে সবার কাছ থেকেই কিছু না কিছু নেয়। সেদিন খোড়া রাসুর সাথে নাকি রিকশায় ঘুরতেও গেছে! ময়নার মায়ের এত ইজ্জতের দাপট, তাইলে মেয়েটা এমন খানকি হয়ে উঠলো কেম্নে তা জিজ্ঞাসা করতে গেল সে।
– আফনের মাইয়া কী করে বেড়ায় আফনে জানেন? মাইয়ারে কি বাজারে উডাইসেন?
ময়নার মা রেগে লাল!
– আমার মাইয়ারে বাজারি কস সাহস কম না! মাগীবাজ হালা তুই পেত্তেক সপ্তাহে মাগীগো কাছে যাস, আমি জানি না? আমার মাইয়ারে মাগী কস?
সোহরাব অত্যন্ত ধাক্কা খাইলো। ময়নাকে বিয়ে করার সব আশা যেন ধুলায় লুটায়ে যায়!
– আমি পুরুষ মানুষ কই যাই তোমার চিন্তা করা লাগব না মাগী। মাইয়ারে কি বান্ধা দিসো সব বেডার ধারে!
ময়নার মা রাগে গজগজ করে কী বললো তা সে শুনল না। 
কিছু না বলে চলে আসলো সোহরাব। সেই রাতে বাংলা খেয়ে মাতাল হয়ে পড়ে রইলো রেল লাইনের পাশে। তার পাশ দিয়ে ট্রেন দ্রুতবেগে চলে যাইতে লাগলো। তার মনে হলো, যেন ময়না নূপুর পড়ে তার পাশ দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে ক্রমাগত…


মালতীর দিন ভালো কাটছে না। শরীর ভালো না, তাও কষ্ট করে গতর খাটাতে হচ্ছে। সোহরাব আসলে এসব থেকে একটু মুক্তি মেলে, টাকাও পাওয়া যায়, গতরও খাটাতে হয় না, ধমক দিয়ে ওই দামড়াকে বসিয়ে রাখা যায়। যখন সোহরাব আসতো, যখন সে চৌদ্দ গুস্টি তুলে গালিগালাজ করত, তখনও কি ভেবেছে সোহরাব তার এতটা কাছের! এই দুনিয়াতে তার দুঃখ কষ্ট সামান্য বোঝার মত তো একটা মানুষই আছে। নাকি ছিল?
মালতির বুক ভেঙে যায়, যদিও সে জানে বেশ্যা মাগীদের মন থাকতে নাই, সোহরাবই বা কেন আসবে, সাত বেটা লুটেপুটে খায় যে শরীরকে, তাকে কেনই বা কদর করবে, তবুও তো মন মানে না!

সখীরা টিপ্পনী কাটে, কিরে তর লাগর কই?
মালতি খিচে উঠে বলে, কেন রে? আমার লাগর তোরা লাগাইবার চাস নাকি?

প্রচন্ড রাগের মধ্যেও তার বুকে সমুদ্রের মতোএক মায়া ভেসে ওঠে, অভিমান ছলকে ওঠে। ভাবে, সামনে আসলে খুব রাগ করবে। সেই রাগের সুযোগটাও বা পাচ্ছে কই। আসেই তো না।
মালতি অপেক্ষায় থাকে, কেউ আসে না, আসে কতগুলো অপরিচিত ছায়া। এদের মালতির মানুষ মনে হয় না, এদের মানুষ মনে করতেও চায় না মালতি।
কিছুক্ষণের জন্য ছায়াগুলো তার শরীর দাপড়ে বেড়ায়, চলে যায়!
দিন এইভাবেই কেটে যায়… পোড়া শরীর আরো পুড়তে থাকে। মন ক্ষয়ে যেতে চায়।


ময়নার বিয়ে ঠিক হলো এক অবস্থাপন্ন ঘরে, দোজবরে লোক, প্রথম বউটা মারা গেল কয়েক বছর হলো অবশ্য ময়নার মায়ের তাতে আপত্তি নাই, গরীবের মেয়েকে তুলে দেয়ার একটা পাত্র তো হলো। নেশাখোর, ভাঙখোর মজুরগুলার থেকে এ তো যেন আকাশের চাঁদ।
ময়নার হবু স্বামীর নাম বজলু মিয়া, বজলু মিঁয়া রাগী লোক, কথা কম বলে।
অবশ্য বজলু মিয়ার পরিবার তাতে খুশি না। বজলু মিয়ার অশীতিপর দাদি নিজের ঘর থেকে চিঁ-চিঁ করে বলে ওঠেন, এখন কি রাস্তার মাগি ঘরে তুলবি রে? গায়ের রং ধলা দেখলে এই পুরুষ জাতের মাথা ঠিক থাকে না। জাতের মাইয়া কালো ভালো।
বজলু মিয়া উত্তর দেয় না, সে আয়না দেখে, চুল আচড়ায়, পেটটা কি বেশি দেখা যায় তাও যেন পরখ করে!
অবশ্য এসব নিয়ে বজলু মিয়াকে বেশি কথা শোনাবার সাহস কেউ পায় না, অবস্থাপন্ন খেয়ালি পুরুষকে কে রাগাবে! তাছাড়া সবাই জানে মাগীর পাল্লায় পড়লে পুরুষের মতিভ্রম হয়, জাত গুস্টি সব ভুলে যায়! বজলু মিয়ার হাত খোলা, তাকে রাগায়ে টাকা পয়সার জোগান বন্ধ করতে কেউই তেমন রাজি না। তবুও কিছু মানুষ, যারা মান বা টাকা পয়সা দুইটাই রক্ষা করতে চায়, তারা বুদ্ধি দিছিলো, টাকা দিয়া এই মাগিরে লাগাইয়া ফেললেই তো হয়। যদিও বজলু মিয়া তাতে রাজি না, সে ময়নাকে একদিন টিউবওয়েলে গোসল করতে দেখেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলছিল, বিয়া করতে হবে।
সোহরাবরে এই কাহিনী, পাশ থেকেই টিপ্পনী কাটার সুরে কেউ একজন তাকে শুনিয়েই আরেকজন কে বলতেছিল, ময়নার মায়ের ত কফাল খুইল্লা গেছে। বড়লোক জামাই!
সোহরাব নীরব রইলো, চোখ থেকে হয়ত দুই ফোটা পানিও ঝরলো।
বড়লোক শুওরের বাচ্চাগুলার জন্য আর কিছু রইলো না।


মালতি সোহরাবকে দেখে অবাক হলো, একটু তাকিয়ে রইল, তারপর দরজা ছেড়ে ঘরের মধ্যে চলে গেল। মালতি সদ্য গোসল করে এসেছে, ভেজা চুল মেলে দিয়ে জানালার দিকে মুখ করে গামছা দিয়ে ঝাড়তে লাগলো। সোহরাব বিছানায় বসে তার দিকে তাকিয়ে রইলো।
নীরবতা ভাঙলো মালতিই। চুল ঝাড়তে ঝাড়তে জিজ্ঞাসা করলো, কই মরছিলি?
সোহরাব এই প্রশ্নের উত্তর দিলো না। মালতির ভেজা শরীরের দিকে তাকিয়ে বললো, তোমারে খুব সুন্দর লাগতেছে।
যদিও মালতিবিবির লজ্জা সময় বা পরিস্থিতি কোনটাই না, তবুও সে লজ্জা পেল। শাড়ি দিয়ে শরীরটা ভালো মতো ঢেকে ফেললো। তারপর বলল, খাইছিস?
– না।
মালতি বিবি ভাত বাড়লো। আগের মতই একটা থালা সোহরাবের সামনে রাখলো।
সোহরাব ভাতের থালা হাতে নিয়ে আগের মতই জিজ্ঞাসা করল, তোমারে খাওয়াইয়া দেই বউ?
মালতি এইবার আর না করল না….

অলঙ্করণ: বৈশালী

লেখক পরিচিতি:

ফাতেমা রিয়া

তরুণ গল্পকার, উপন্যাসও লিখেছেন। জন্ম ১৯৯৫ সালে। দেশের বাড়ি বরিশাল। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন পড়েছেন। সাহিত্য, সঙ্গীত, দর্শন ও রাজনীতে বিশেষ আগ্রহ রয়েছে।

Share

2 thoughts on “ফেরা”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top