আজ বৃহস্পতিবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বিক্ষিপ্ত মেঘের উচ্চারণ

।। অংশুমান ।।

বোঝা যায়, কবিতার ঝলমল থেকে সরে আসছি
হঠাৎ রাস্তায় আছড়ে পড়ে
মৃত পাখি
প্রকৃতিপ্রেমীদের থেকে দূরে
ছিটকে যায় পালক
সংকেত বিজ্ঞান থেকে কেটে পড়ি
মৃত্যুচেতনার বিলাসিতা নেই আমার
মরছি তো মরছি
আমি তো বৃষ্টির আঘাতেও মরে যাই
ক্রমাগত
রেইনস্ট্যাবিং

বিক্ষিপ্ত মেঘের উচ্চারণ

জল পড়ে
জলের উপর, অন্য জল
কিছু নড়ে না
কবিতার বিভ্রান্ত গ্রাভিটি কাজ করে

আবেগ যুক্তি কমন-ম্যান
যদিও
আর সাধারণ নেই কোনো মানুষই
নিজের পা থেকে মাথা অবদি খায়
খাল্লাস করে নিজস্ব রূপ
কোটি কোটি বছর নিজেকে ছাড়িয়েও
পার হতে পারে না

হে আত্মীয়
মৃত্যুদিনে মদের বোতল নিয়ে
মর্গের দরজায় অপেক্ষা কোরো
লাশের
ড্রামাবাজি, এই আটার ড্রামাবাজি অব্যাহত রেখো
দর্শন আমাদের এমন নিস্তেজ করেছে
এই আধো-আলতো কনশাসনেস
সলিটারি সেলের থেকেও গহীন অত্যাচার
আর এসব গহীন ফহীন! শব্দের নামে
ডিপ ফেক, ভাঁওতা
ভাষার টেকনিক ফুরিয়ে এসেছে
সরাসরি এসো বস্!
নির্বাক অ্যাকশানে এসো
প্রশ্বাসের শব্দ হোক উষ্ণতা বাড়ুক

অস্থির টান অনুভব করি
কবিতার বিপরীতে
এতবার
যোনির শব্দ শুনতে পাই
কলকারখানা
শ্রমিক মজুর চোর-চাতুরী গর্ভের ভিতর নিস্তরঙ্গ মুভমেন্ট

মর্গের কথা টেনে আনে অপমৃত্যু
অপজন্মের কথা কীভাবে বলা যায়
বড্ড থিওরেটিক্যাল ভাবনা পদ্ধতি
এই পথে
নিজেদের হত্যা করেছেন শহরের ভাল লোকেরা
এমনকি হোতা-হনু সম্প্রদায়ও
ছেড়ে কথা বলেননি
তারা জানেন
আত্মহত্যার চেয়ে বড় নেশা আর নেই
একটু একটু করে বারবার
একবার
দু-চার বার চুলে হাত মেরে নায়কের মত
প্রেমিকার সামনে নগ্ন হওয়ার মত
আলোর সামনে ছিটকিনি খুলে দেওয়ার মত
এই তো মিলিয়ে যাওয়ার উপায়
অপজন্মের ইমপ্রেশন রেখে
হারামির মত
একেক বার মনে হয় মাড়ানো জীবনের
মণ্ডের উপর ছত্রাকের নেটওয়ার্ক
আমি এক

এই যে ছত্রাকের মেটাফরে পুনর্জন্ম
নেশা ফেটে যায়
প্রায়ই
মানবাধিকার আবিষ্কারের পর থেকেই
চরম ভায়োলেন্ট হতে ইচ্ছে করে
রক্তারক্তি ফালাফালা ত্বক
একটা রক্ত মাখানো সিগারেট ধরানোর মত
মহান এক্সপেরিয়েন্স
আহা!
দেশলাইয়ের মিসফায়ার
যেন প্লেজার ক্লাবের আন্ডারগ্রাউন্ড রাস্তা
অতিধীর শাম্ব মখমলি চোখের
আলবেলি ওয়েলকাম
কার চোখ
কেন
ভোরবেলা খুলেছিল মেঘ মেঘ হয়ে
গ্যালাক্টিক হাতছানি দুধ ছানা আলতা
স্তন

মুখ ফেরাই কবিতা থেকে যখন তখন
নিজেকে রাজা মনে হয়, সম্রাট!
পুরুষ নিজের ক্ষমতা কল্পনায় সন্তুষ্ট হয়
সে জানি
নারী হলে বা অন্য কিছু
যায় আসতো না কিছু আমার
নিজেকে মিথ্যে বলার থেকে ইনসেন অস্ত্র আর হয় না
যে যা নয়, তাই
প্যাঁচ পয়জারের জিন্দেগানি
হাওয়া বয়ে যায়
চোয়াল ঝিরঝির করে মাঝে মাঝে – হেয়ারলাইন ক্র্যাক
কথা বলা দরকার
ছটফট করা দরকার একটু অথবা বেশ খানিকটা
স্তন খামচে ধরতে যাওয়া
মানুষের চিরায়ত নস্টালজিয়া
শিশুর প্রথম শিকার
খানা পিনা প্রবৃত্তি
ঢলে ওঠা ঘুমশরীর
সুপ্ত রক্তগন্ধ
ঔষধ

বোঝা যায়, কবিতার ঝলমল থেকে সরে আসছি
হঠাৎ রাস্তায় আছড়ে পড়ে
মৃত পাখি
প্রকৃতিপ্রেমীদের থেকে দূরে
ছিটকে যায় পালক
সংকেত বিজ্ঞান থেকে কেটে পড়ি
মৃত্যুচেতনার বিলাসিতা নেই আমার
মরছি তো মরছি
আমি তো বৃষ্টির আঘাতেও মরে যাই
ক্রমাগত
রেইনস্ট্যাবিং

অবিরাম গীতিকবিতার জন্ম হয়
এই সংস্রব
বহুদূরে শোনা যায়
বেঁচে থাকার শব্দ
ইউনিভার্সাল কোলাহল
পুরোনো আলমারির কান্না হতাশ বিছানা বালিশ
লং-শটের সংসার
চোখ মানেই কনফ্রন্টেশন-এর প্রসঙ্গ
এড়িয়ে যেতে পারছি না
যে চোখের সামনে চোখ খুলে গেলে
স্নায়ুহরিণ
আঙুল নিজেই কেঁপে ওঠে
আবহমান জিনের ভিতর লেখা যুদ্ধের ইতিহাস
উথলে ওঠে ঔরস
বোতামহীন জিন্সে ওম নিয়ে
তবু ভোরের নরমে জিজ্ঞেস করি
ঘুম কেন ভেঙ্গে গেল তার
তার জায়মান উষ্ণতা নখে নিই
আরও বিশ্রামের কথা বলি
আরও
নিস্তব্ধ বিশ্রাম
নাও

ফটোগ্রাফ- অতনু সিংহ

অংশুমান

মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে জন্ম। বর্তমানে কলকাতায় বসবাস। পেশাগতভাবে ভিসুয়াল আর্টিস্ট ও ফিল্ম এডিটর; এবং অডিও-ভিসুয়ালের অন্যান্য ক্রিয়াকর্মের সাথে যুক্ত। লেখালেখির সূত্রপাত  ও প্রথম প্রকাশকাল ২০০৫-০৬ সাল নাগাদ। ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ‘দলছুট’ পত্রিকার সম্পাদনায় যুক্ত থাকা। এখনও পর্যন্ত প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা তিন, ‘খোলো আরো খোলো’, ‘সহবাসকালীন অন্যমনস্কতা’ ও ‘ম্যাট ব্ল্যাক’। প্রকাশিতব্য বই, ‘শৈশব অজাচারের ক্যাম্প’।

Share

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top