আজ শনিবার, ৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শাক্তস্মৃতি ও ধামরাই

।। মুরাদ বিশ্বাস ।।

,

মহাপ্রকৃতি রূপে মাতৃসাধনা অখণ্ড বাংলার লোকজীবনে প্রসারিত হয়েছিল শাক্তচর্যার মাধ্যমে। এ ক্ষেত্রে ধামরাই অঞ্চলটি গুরুত্বপূর্ণ। কাল আর শক্তির ধারণা একদিন এই বংশাই-ধলেশ্বরীর তীরবর্তী প্রাচীন ধামরাই জনপদে বিস্তার লাভ করেছিল শাক্তসাধনা রূপে। ঢাকা জেলার অন্তর্গত ধামরাই উপজেলার মাধববাড়ি, সোয়াপুর, নান্না, যাদবপুর, বেলেশ্বর প্রভৃতি এলাকায় শাক্ত সম্প্রদায় কর্তৃক স্থাপিত মন্দিরগুলো সাক্ষ্য বহন করে। মনে রাখা দরকার, অখণ্ড বাংলায় শাক্ত ভাব একসময় যাপনসংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করেছে। বাংলা সাহিত্যে যে কালপর্বজুড়ে শাক্তপদাবলি রচিত হয়েছে, একসময়ের অবিভক্ত বাংলায় মাতৃসাধনা তারও অনেক আগে থেকে।

সদানন্দময়ী কালী
মহাকালের মনমোহিনী
তুমি আপনি নাচো, আপনি গাও মা,
আপনি দাও মা করতালি।
আদিভূতা সনাতনী, শূন্যরূপা শশীভালি
ব্রহ্মান্ড ছিল না যখন
মুন্ডমালা কোথা পেলি?

শাক্তস্মৃতি ও ধামরাই

কবি কমলাকান্ত ভট্টাচার্য শাক্ত পদাবলিতে যে প্রশ্ন দিয়ে শুরু করেছেন, সেখান থেকে এই লেখার শুরু। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, আল্লাহ্ বলেন, ‘কুন’ (অর্থাৎ হও)! তারপর সৃষ্টি হলো এই অনন্ত মহাবিশ্বের। সেই শব্দরূপী শক্তির বন্দনার সঙ্গে কোথাও গিয়ে মিলে যায় বাংলার আর্যপূর্ব সনাতনী ভাববৈচিত্র্যের কিছু কিছু ধারা। শাক্ত ভাবচর্চা এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।

কবি, চিন্তাবিদ ফরহাদ মজহার তাঁর ‘ভাবান্দোলন’ নামক গ্রন্থে এই বিষয়ে চমৎকার একটি বি|ষয়ের অবতারণা করেছেন। তিনি দেখাচ্ছেন যে কমলাকান্ত তাঁর গানে প্রশ্ন তুলছেন, যখন ব্রহ্মাণ্ড ছিল না, অর্থাৎ মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়নি, যখন প্রাণের স্পন্দন ছিল না, তখন কালীর গলায় নরমুণ্ড কোথা থেকে এল? তার মানে দাঁড়াচ্ছে, মানবসত্তার জন্ম একই সঙ্গে প্রাণ আর সময়কে নিয়ে। সময়ের ধারণা দাঁড়িয়ে আছে মানবসত্তায় ভর করেই। তারা একে অপরের সঙ্গে জড়িত। মানুষ ছাড়া সময়ের অস্তিত্ব নেই। কমলাকান্তর গানটিকে স্মরণ করিয়ে ফরহাদ মজহার এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাচ্ছেন যে মার্টিন হাইডেগার ‘বীইং এন্ড টাইম’ লেখার অনেক আগেই কমলাকান্ত দেখিয়েছেন যে বঙ্গের চিন্তায় সত্ত্বা ছাড়া সময়ের কোনো মুল্য নাই।

কমলাকান্ত

মহাবিশ্বের সৃষ্টির পর যেমন জীবনের সাপেক্ষেই সৃষ্টিতত্ত্ব নানাভাবে চর্চায় এসেছে, তেমনই মহাকালীর অস্তিত্বের প্রকাশ ঘটেছে মানুষের মানবপ্রকৃতি ও মহাকালের বন্দনার মধ্য দিয়ে। সময়, স্মৃতি, স্থান ও জীবনজিজ্ঞাসার মীমাংসার মধ্য দিয়েই সেকালের বঙ্গের আদি চিন্তা ও জীবনপ্রণালি ‘শাক্ত’ভাবধারা প্রসারিত হয়েছে।

এই কাল আর শক্তির ধারণা একদিন এই বংশাই-ধলেশ্বরীর তীরবর্তী প্রাচীন ধামরাই জনপদে বিস্তার লাভ করেছিল শাক্তসাধনা রূপে। ধামরাইয়ের মাধববাড়ি, সোয়াপুর, নান্না, যাদবপুর, বেলেশ্বর প্রভৃতি এলাকায় শাক্ত সম্প্রদায় কর্তৃক স্থাপিত মন্দিরগুলো সাক্ষ্য বহন করে। মনে রাখা দরকার, অখণ্ড বাংলায় শাক্ত ভাব একসময় যাপনসংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করেছে। বাংলা সাহিত্যে যে কালপর্বজুড়ে শাক্তপদাবলি রচিত হয়েছে, একসময়ের অবিভক্ত বাংলায় মাতৃসাধনা তারও অনেক আগে থেকে। শ্রীচৈতন্যের বৈষ্ণব ধর্ম যেমন প্রভাবিত করেছিল এই ভূখণ্ডের সকল বিশ্বাস ও জীবনচর্যাকে, ঠিক তেমনই শাক্তের প্রভাবও অনেক ব্যাপক। ইসলামি ধারার লোকায়ত ভাবচর্চার মধ্যেও ভাবের আদান-প্রদান হয়েছে শাক্ত দর্শনের সঙ্গে। কাজী নজরুলের শ্যামাসংগীত তারই প্রমাণ। কিংবা ময়মনসিংহের মরমি কবি জালালউদ্দীনের কথাও এ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য। তাঁর পূর্বপ্রজন্ম ইসলামের ছত্রচ্ছায়ায় এলেও তাঁদের জীবনে যে শাক্তভাবনার স্পন্দন ছিল, জালালউদ্দীনের গানে মায়া, প্রকৃতি, মা, নারী ইত্যাদি আলাপচারিতা দেখে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। একসময় হালিশহর হয়ে পশ্চিমবঙ্গে শাক্ত ধারা খুবই জনপ্রিয় হয়। তার সঙ্গে মিশে যায় রাঢ়বঙ্গের তন্ত্রধারা। এ কথাও উল্লেখ্য, আজকের পশ্চিমবঙ্গে একসময়ে এই ভাবধারা বিস্তার পেয়েছিল পূর্ববঙ্গ থেকেই। বরিশালের সুগন্ধা শক্তিপীঠ, ভূরুঙ্গামারীর সোনাহাট কালীমন্দির, ঢাকার বরদেশ্বরী কালীমন্দির মন্দিরের মতো বহু মাতৃসাধনাস্থল সেই সাক্ষ্য বহন করে। বাংলাদেশের প্রায় সব জেলাতেই সুপ্রাচীন কালীমন্দিরসহ মাতৃমন্দির রয়েছে। ধামরাইয়ের ইতিহাস নিবিড় পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এখানকার মাতৃসাধনার রীতি সুপ্রাচীন।

ধামরাইয়ের প্রাচীণ কালী মন্দির

শক্তির ধারণা কীভাবে এখানে এত বিকশিত হয়েছিল, তা হয়তো গবেষকেরা বলতে পারবেন। ধারণা করা হয়, তন্ত্র থেকে একপর্যায়ে এই শাক্তদর্শনের আবির্ভাব। কিন্তু আজ এই সম্প্রদায়ের কোনো খোঁজ আর নেই, শুধু কালীমন্দিরগুলো আছে। অথচ সেগুলো গড়ে উঠেছিল যে দার্শনিক চিন্তার ওপর ভিত্তি করে, সেই যাপন আর নেই, যেখানে একসময় বৈষ্ণবদের সঙ্গে শাক্তদের দার্শনিক তুমুল তর্ক ছিল, ধর্ম যেখানে জীবনজিজ্ঞাসা ছিল, সেটা এখন শুধু পরিচয়বাদী একটা বিষয়ে পর্যবসিত হয়েছে মাত্র। ধামরাইয়ে কাপালিকরা ছিল কালীর উপাসক। এর সঙ্গে বৈষ্ণব মতের সঙ্গে যে দার্শনিক বিরোধ, সেটা এখন জনবিস্মৃত। এখন ভক্তি বাদ দিয়ে নেহাত অভ্যাস অথবা একপ্রকার বিনোদনের জায়গা থেকে অষ্টপ্রহর রাধা-কৃষ্ণের লীলা সংকীর্তনের আয়োজন করা হয়, আবার কালীপূজার সময় পাঁঠা বলিও দেওয়া হয়। কিন্তু সম্প্রদায়গত পরিচিতির জায়গা ছাড়িয়ে তাদের নিজস্ব মর্মভাব বোঝার ক্ষেত্রে কোনো জিজ্ঞাসা বা খোঁজের লক্ষণ দেখা যায় না।

ধামুরাইয়ের আরেকটি প্রাচীন কালী মন্দির

সব ধর্মেই জীবনজিজ্ঞাসা, দার্শনিক আলাপ, ভক্তি ও আত্মসমর্পণের বিষয়গুলো অনেক ক্ষেত্রেই আজ পরিচয়বাদের গন্ডিতে আবদ্ধ। ধামরাইয়ের সাংস্কৃতিক ইতিহাসের পরিণতিও তার বাইরের কিছু নয়। এখন শাক্ত, বৈষ্ণব, শৈব থেকে আধুনিক ইসকন- সব একাকার হয়ে শুধু পরিচিতির টুল মাত্র।

ধামরাই অঞ্চলে কীর্তন বরাবরই জনপ্রিয়। যদিও কীর্তনীরা আর শাক্ত পদাবলি গান না, এখন আর বংশাই, ধলেশ্বরী, গাজীখালির তীরে রামপ্রসাদ সেন, কমলাকান্ত ভট্টাচার্যের মাতৃসংগীত বাতাসে ভাসে না, কিন্তু একদিন প্রাচীন বটগাছের নিবিড় ছায়ায় অথবা শুক্লা দ্বাদশীর জ্যোৎস্না বিছানো কোনো প্রাচীন গাঁয়ের উঠানে গেয়ে উঠত কীর্তনিয়া, ‘চাই না মা গো রাজা হতে/ রাজা হওয়ার সাধ নাই মা গো/ যেন দুবেলা দুমুঠো পাই মা খেতে…

যে শাক্ত ধর্মে মানুষই প্রধান ছিল, সেখান থেকে তারই অবলুপ্তি ঘটেছে। অথচ এই মানুষ প্রকৃতি থেকে পৃথক কোনো সত্তা নয়। এই সম্প্রদায়ের যাপন ছিল সাধনাকেন্দ্রিক, শুধু বুদ্ধির বিচার দিয়ে সেই তত্ত্ব অনধিকারী মানুষের বোধগম্য হয় না। এর উপলব্ধি সম্প্রদায়গত গুরুপরম্পরায় বাহিত। তা এই যে মানুষ যেখানে মুখ্য ছিল, তা গৌণ হয়ে যাওয়ায় সমস্যা কোথায়? জটিলতা হচ্ছে এই, কেন্দ্রচ্যুতি থেকেই মানুষের সহিংসতা বোধের জন্ম। শাক্ত সাধকদের একনিষ্ঠ লক্ষ্য ছিল, সাধনায় অদ্বৈতসিদ্ধি। কারণ, জ্ঞানের কূটবিচারে শক্তি সহিংস হয়ে ওঠে।

তখনো পুরুষশাসিত সমাজের সৃষ্টি হয়নি, সেই প্রাচীন টোটেম মাতৃতান্ত্রিক কৌমে নারীকে মনে করা হতো প্রকৃতি আর প্রকৃতি থেকে প্রাণের উদ্ভব। বৈদিকে অদিতি, আর অখণ্ড বঙ্গের তন্ত্রে প্রকৃতির আধার হিসেবে তারা তারপর কালী। এসবই সে সময়ের মাতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার নিশানা।

নারীই প্রকৃতি যা সত্তঃ রজঃ তমঃ- এই তিন গুণের সমাহার। শক্তি থেকে নাদের উৎপত্তি, শব্দব্রহ্মস্বরূপিণী কুন্ডলিনীই সর্বতত্ত্বময়ী, তিনিই প্রকৃতি। তাই তো পুরাণে পাই যখনই মানুষ সংকটে পড়েছে, তখন প্রকৃতিকে সে আবাহন করেছে, যেমন- শ্রীরামচন্দ্রের দুর্গা অকালবোধন।

মানুষ এই প্রকৃতির সন্তান। তাই আদি বাংলার ভাবাদর্শে একটা বাক্য প্রচলিত, ‘যাহা আছে ভান্ডে তাহা আছে এই বিশ্বব্রহ্মণ্ডে’, এই বিশ্বপ্রকৃতি আর মানুষের উপাদান একই। মানুষ যখন প্রকৃতি থেকে নিজেকে আলাদা করে, তখন প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করার বাসনা জাগে, এই বাসনা যখন লোভে রূপান্তরিত হয়, তখন সমাজে দেখা দেয় প্রতিক্রিয়া, সমাজ কলুষিত হয়, তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা।
মাতৃপূজার ইতিহাস এই অঞ্চলে অনেক পুরোনো, অস্ট্রিক আর প্রোটো দ্রাবিড়ের মধ্যেও মাতৃপূজার প্রচলন ছিল। এই ধারাবাহিকতা শাক্ত-কৌল সাধকদের মধ্যেও প্রচলিত। কৌল শাস্ত্রে নারীকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। নারী যদি অসৎ হয়, তাকেও সম্মান দিয়ে কথা বলতে হবে। শত অপরাধ করলেও তাকে পুষ্প দিয়ে আঘাত করা যাবে না। তার কোনো দোষও প্রকাশ করা যাবে না। এভাবেই এই ভূখন্ড নারীকে সম্মান দিয়েছে।

শক্তির ধারণা কীভাবে এখানে এত বিকশিত হয়েছিল, তা হয়তো গবেষকেরা বলতে পারবেন। ধারণা করা হয়, তন্ত্র থেকে একপর্যায়ে এই শাক্তদর্শনের আবির্ভাব। কিন্তু আজ এই সম্প্রদায়ের কোনো খোঁজ আর নেই, শুধু কালীমন্দিরগুলো আছে। অথচ সেগুলো গড়ে উঠেছিল যে দার্শনিক চিন্তার ওপর ভিত্তি করে, সেই যাপন আর নেই, যেখানে একসময় বৈষ্ণবদের সঙ্গে শাক্তদের দার্শনিক তুমুল তর্ক ছিল, ধর্ম যেখানে জীবনজিজ্ঞাসা ছিল, সেটা এখন শুধু পরিচয়বাদী একটা বিষয়ে পর্যবসিত হয়েছে মাত্র…

শাক্ত ট্র্যাডিশনে শব্দ খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, পরাশক্তি যখন সৃষ্টি হতে উন্মুখকামী হন, তখন সৃষ্টিমুখে তার প্রথম স্পন্দন ‘নাদ’। শাক্তমতে সৃষ্টি দু’রকম, এক শব্দময়ী, দুই, অর্থময়ী। তবে প্রথমে শব্দ পরে অর্থ। সমস্ত অর্থই শব্দের বাচ্য প্রকাশ। শব্দ সেখানে বাচক, প্রকাশক আর অর্থ বাচ্য, প্রকাশ। অর্থাৎ শক্তি থেকে নাদ আর এই নাদ থেকে বিন্দুর সৃষ্টি, যা অর্থ হয়ে আমাদের ইন্দ্রিয়গোচর হয়। শাক্ত দর্শন শক্তিকেন্দ্রিক। শাক্তানুসারে, শক্তি জগৎ সৃষ্টির কারণ, নিমিত্ত এবং উপাদান উভয়ই। শক্তি জগতের উপাদান, কারণ, অর্থ জগৎ শক্তির পরিণাম।

ধামরাইয়ের কথা বলি, এখানে এই প্রাচীন সমৃদ্ধ ভাবধারা হারিয়ে গেল কীভাবে, কখন যে অগোচরে চলে গেল, এই অঞ্চলের মানুষ কী হারাল, এই জিজ্ঞাসাও আজ গৌণ। এই যে ভাবকে ধারণ করে যে যাপন, সেটার অনুপস্থিতিতে সোসাইটি তো দিব্যি চলে যাচ্ছে। তবে কেন এই শাক্তস্মৃতির আলাপ? কারণ, আমরা তো মানুষ, দিন শেষে আমাদের মানুষের কাছেই ফিরতে হয়। পারস্পরিক সম্পর্কের মধ্য দিয়ে সেবা, ভালোবাসা দিয়েই অধরাকে ধরার চেষ্টা করে যেতে হয়।

আমি কি হেরিলাম
নিশি স্বপনে
মহারাজ হে!
অচেতনে কত না ঘুমাও।

বর্তমান জীবনধারায় আধুনিকতার নামে পণ্যবাদ, ভোগবাদ আমাদের নিজস্ব লোকায়ত সংস্কৃতিকে বেমালুম ভুলিয়ে দিচ্ছে। কেবল পাশ্চাত্য সংস্কৃতিকে আত্মস্থ করার যে প্রবণতা, তার ফলেই শিকড় বিচ্ছিন্নতা।

এটা হয়তো ধামরাই তথা বৃহত্তর বঙ্গভূমিতে মানুষকেও মানুষ নামক ধারণা থেকে বিচ্ছিন্ন করে কৃত্রিম চিন্তাজগতে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। যেখানে আছে শুধু ভোগ, লালসা, হিংসা ‘হিংসায় উন্মত্ত পৃথ্বী, নিত্য নিঠুর দ্বন্দ্ব… এটাই বাস্তব যে ধামরাই থেকে শাক্ত ট্র্যাডিশন প্রায় শেষ। মানুষকে কেন্দ্র করে শাক্তের যে জীবনদর্শন, সেটা প্রায় স্মৃতি এখন। কিন্তু আমরা এ-ও জানি, মানুষ অপার সম্ভাবনাময়, ভস্ম থেকে ফিনিক্স পাখির মতো বারবার সে বেঁচে উঠতে জানে। এই বিস্মৃতির অমানিশা ভেদ করে পূর্ণিমার চন্দ্রমার মতো কোনো সাধকও একদিন এই জনপদে আবার মানুষকে কেন্দ্র করে মানবেতিহাসে কর্তা হওয়ার যে যাত্রা তার কথা বলবে, হয়তো শাক্ত নয়, অন্য কোনো রূপে, অন্য কোনো ভাবে।

ইন্তেজার জারি থাকবে। যদিও ইন্তেজার বড় যন্ত্রণাময়।

কালীচক্র বা কালীযন্ত্র

ছবি: লেখক ও ইন্টারনেট

মুরাদ বিশ্বাস

লেখক ও সমাজকর্মী। পেশায় কৃষক। বসবাস ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলায়।

Share

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top