বিনয় মজুমদারের দুইটি অপ্রকাশিত কবিতা

সৌজন্যে: সুকৃতি সিকদার

কবি বিনয় মজুমদার তাঁর বেশ কিছু অপ্রকাশিত কবিতা ও অন্যান্য লেখা পশ্চিমবঙ্গের শূন্য দশকের কবি সুকৃতি সিকদারের হাতে তুলে দিয়ে বলেছিলেন, ‘এগুলো পুড়িয়ে ফেলো।’ কবির নশ্বর দেহ শ্মশানের চুল্লিতে পুড়ে ভস্ম হয়ে গেলেও সুকৃতি বিনয়ের অপ্রকাশিত কবিতা ও অন্যান্য লেখাগুলি সযত্নে রেখে দিয়েছেন। বিনয়ের জন্মদিনে সেই অপ্রকাশিত কবিতাগুলি থেকে তিনটি কবিতা তিনি উপহার দিয়েছেন ‘প্রতিপক্ষ’ পত্রিকাকে। যার মধ্যে দুটি কবিতা প্রকাশ করা হলো। আরেকটি কবিতার খসড়া ইমেজ আকারে প্রকাশ করা হচ্ছে, কারণ, সেই কবিতাটি ঠিক মতো পাঠোদ্ধার করা সম্ভব হয় নি।
– সম্পাদকীয় দফতর, ‘প্রতিপক্ষ’

আটবার পাগলাগারদে

আমাকে সারাজীবনে মোট আটবার
পাগলাগারদে পুরেছে।
বাড়ীতে যখন থাকতাম তখন
নিয়মিত পাগলের ঔষধ খেতে দিত।
তারপর ভাবলাম আমার চিন্তা যে নিখুঁত
তার একটা প্রমাণ দেখানো যাক সকলের
সামনে বসে। ভেবে আমি ঠাকুরনগর রেলওয়ে
প্লাটফর্মে বসে জ্যামিতি লেখা শুরু করলাম।
দৈনিক একটি নূতন উপপাদ্য লিখলাম।
প্রপার্টিস অব সারকেল আঁকলাম গোটা দশেক—
তারপর সবাই বললো, ‘আপনার মনোরোগ নেই,
পাগলের ঔষধ আর খেতে হবে না।‘
বর্তমানে আমি আর কোনো প্রকারের ঔষধ খাই না।

শালপাতা

আমি একটি কবিতায় লিখেছিলাম, “শালপাতা খুব দোলে মনে হয় বাতাসেই”। পাঠকপাঠিকাগণ কবিতাটি পড়েই ভাববে কোনো এক দেবতা পৃথিবীর সমস্ত গাছের পাতা, ঘাসের পাতা আগাছার পাতা, উদ্ভিদের পাতা নিজের খুশি মতো দোলান। হিমালয় পর্বতে কত পাতা আছে তাই বোঝো। যদি মনে হয় সব উদ্ভিদের পাতা কোনো এক দেবতার পক্ষে দোলান সম্ভব! ধরা যাক অসম্ভব। কিন্তু পৃথিবীতে যত শালপাতা আছে তার সবই একজন দেবতার পক্ষে দোলান সম্ভব। এটা সত্য কথা। কবিতাতি এখানেই শেষ।

আমাকে সারাজীবনে মোট আটবার
পাগলাগারদে পুরেছে।

বিনয় মজুমদারের কবিতার খসড়া

বিনয় মজুমদারের কবিতার খসড়া

সুকৃতি সিকদার

পশ্চিমবঙ্গেরর শূন্য দশকের কবি। নিবাস, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা, পশ্চিমবঙ্গ।

Share