।। প্রত্যুষ বন্দ্যোপাধ্যায় ।।
সব মনে থাকে। যারা খেতে পায় না, তারা বরং খিদেকে বিয়োগ করে যোগে মন দিক। ভারতবর্ষের আত্মা
তেরঙা উত্তরীয় পরে বিদেশে বাণিজ্য করতে যাক। বিস্তৃত খনি অঞ্চল লুঠ হোক।
মালভূমির কোনো দলিল থাকবে না। কালোকোলো চেহারার মানুষগুলোকে শহরে নিয়ে এসো
ক্র্যাফট্স -হাটে তারা তাদের আল্পনা বেচুক। পৃথিবীর বেচুবাবুরা সহস্রাব্দের লম্পট উল্লাসে
এ পৃথিবীকেই বেচুসভ্যতায় পরিবর্তন করুক। তোমার সুতো খোলা গামছা—তোমারই থাকবে।
তোমার ছেঁড়া গেঞ্জি ,ফুটো মোজা ,পোঁদ ফাটা জাঙিয়ার যেন কোন চাহিদা থাকতে নেই !
শুকনো খড়ের গাদায় শুয়ে তুমি বিড়ি ধরাও আর আপামর ঘুনপোকাদের টেন্ডার ছাপো।
তোমার মহার্ঘ উদাসীনতায় ব্যাঙেরা লাফিয়ে লাফিয়ে পেচ্ছাপ করুক।
তুমি শোঁকো আর মোহিত হয়ে যাও।
ভেতরে ঘাতক বসে থাকে
(বারুণী)
এসো, ছদ্মবেশ নিই
এসো, খুন করি
মাথার ভিতরের অন্ধকারগুলো বাইরে উপড়ে আনার জন্যেই তো, বইপত্র আর লেখালিখির
মধ্যে মৌন সহবাসপ্রথা চালু আছে। তুমি এর মধ্যে কোথাও কোনো ফাঁক রেখো না।
উন্মাদনার সাথে কুশলী কারুকার্যে মিলিয়ে দিও প্লুত স্বরের গাদ।
একক হনন এক প্রাকৃত উদ্যম নিয়ে আসে
তুমি তার যৌথ খামারে বীজ বোনো
অহেতুক সন্দেহ তোমার আজন্ম ব্যাভিচার। তুমি মুক্তি চাও না, তুমি মৃত্যু চাও না
শুধু কেতাবী শিরস্ত্রাণ চাও। এর সাথে কিছু আসঙ্গ লালসাও আছে।
সাজানো কেল্লার সামনে যেভাবে দ্বারবান বসিয়ে দর্শনী উশুল করা হয়
তুমিও ব্যাধিগুলোকে বোতামে রুমালে পারিপাট্যের তৃতীয় বন্ধনী যুক্ত মোহে
বিছিয়ে রেখেছো।
সম্রাটেরা বিদূষক পোষে
তুমি পোষও তির্যক চাহনি
ভুলগুলি বহন করেছ, কন্ঠহার তীব্র ক্লিভেজে। সিগারেট গোঁজা উরু, জ্বালাপোড়া
তবুও মেয়েটি , যেখানে দাঁড়ায় রোজ, ইতিহাস প্রসিদ্ধ হোক — এই বলে সিগারেট
ছুঁড়ে দিলে তুমি। আর রাত্রি চিৎপাত বেজে যায় এফ-এম তরঙ্গ ধ্বনিময়,
ডেলিক্যেট লিপস্টিক, আদুরে পুসির ঠোঁট, ভাষা বাংলা রোজ চেটে যায় আর তুমি
চ্যুইংগামের যথাসর্বস্ব প্রতিশব্দ হাতড়াও আর তলপেট ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে
লিঙ্গহীন রেতঃপাত আনো।
মা বোন বেশ্যা হলে পুরুষের ঘরের দখলদারী যায়। পৌরুষ বহুমুখী তৃপ্ত হতে শেখে।
এ এক শাশ্বত প্যারাডক্স, আঙুলের ফাঁকে জল এভাবেই গলে।
পৃথিবীর শ্বাপদেরা, শোনো, পিশাচ ব্রতের কাছে ন্যুব্জ হয়ে আছি।
উদ্ধারিত হবো না, পহেলা মর্কট এই মার্কেট প্রদেশে।
ছিলিমে ছিলিম হবো, মদে মদ। বিষের ফণায় হবো চিরতরে বিষ।
গলায় গলায় ভাব, আস্তিনে গোপন শলাকা।
উদ্ধারিত হবো না আর। ডুবে যাবো কামপুঁজ মোহে।
পৃথিবীর সরীসৃপ, এই বস্তি দেশে, কপট ভিক্ষার কিছু পাঠ নিয়ে যাও।
তারপর আমাদের গিলে ফ্যালো, না চিবিয়ে দ্রবীভূত করো সব নাভি।
ইস্কাবনের টেক্কা ঝাড়েন
ইস্কাবনের বিবি
চাবুক কিনে ঘোড়ার অভাব
জাগিয়ে রাখেন যোগী
ঘাম আর পেচ্ছাপের গন্ধ মেখে তোমার বিস্তীর্ণ রোমরাজী ভিজে আছে।
কৃকলাস সভ্যতার অবদান মেনে, তুমি হাতে ব্লেড তুলে নাও।
ক্লিক করো থ্রেডে, খুলে দাও উইন্ডো অপার। দরজার বাইরে যে ডাকবাক্স
সেইখানে রেখে এসো কাগজ কলম। ঠিকানাবিহীন চিঠিগুলো না লেখার হলেও,
অক্ষর বেঁচে থাকবে। হাতের ডগায় ঘাস, নখের ডগায় কুসুম
শব্দ করে ছিঁড়ে যাবে উন্মুক্ত লেফাফা। তখন লাফিং বুড্ঢা’র থেকে লাফ দিচ্ছে
হাসি আর হায়েনার দাঁতে শিশুদের কন্ঠনালী চিরে ফেঁড়ে যাবে।
অতএব না বলো
মৃত্যু আর যৌনতার পারম্পর্য রক্ষা করতে হলে
না বলে যাওয়াটাই
একমাত্র সাঁকো ও সাম্পান
ফুসফুসের ঈর্ষা হোক
তুমি না বলো
কেচে রাখা প্যান্টের আধখানা বোতাম
তুমি না বলো
পতাকা নতুন সঙে ফিরে আসতে চাইলে
না বলো
কৃচ্ছসাধন থেকে উপবেশনের সুড়ঙ্গ পথে
না বলো
ন্যায়ের গর্ভদেশে বেজন্মারাই জন্ম নিয়েছে এতোদিন, তুমি না-এর গর্ভদেশ খোঁজো।
প্লাজমা টিভি’র নারী বিছানায় বাতকম্মো করুক অবাধ।
বাচ্চাদের ইস্কুলে, বাথরুমে
টিকটিকির মতো ঘাপটি মেরে থাকুক ধর্ষকাম আততায়ী। আইনের আলো তার
নিজস্ব অন্ধকার পথেই চলবে। সব নাম বদলে যায়সর্বনামে কাঁঠালি কলার চাষ হয়।
কিন্তু, হরিদাস পালের কোন এফিডেবিট হয় না। শুধু রবীন্দ্র উপনগরীর পাশে নজরুল ষ্টেশন
আর সুভাষ উদ্যান গড়ে ওঠে।
যারা খেতে পায় না, তারা বরং খিদেকে বিয়োগ করে যোগে মন দিক। ভারতবর্ষের আত্মা
তেরঙা উত্তরীয় পরে বিদেশে বাণিজ্য করতে যাক। বিস্তৃত খনি অঞ্চল লুঠ হোক।
মালভূমির কোনো দলিল থাকবে না। কালোকোলো চেহারার মানুষগুলোকে শহরে নিয়ে এসো
ক্র্যাফট্স -হাটে তারা তাদের আল্পনা বেচুক। পৃথিবীর বেচুবাবুরা সহস্রাব্দের লম্পট উল্লাসে
এ পৃথিবীকেই বেচুসভ্যতায় পরিবর্তন করুক। তোমার সুতো খোলা গামছা—তোমারই থাকবে।
তোমার ছেঁড়া গেঞ্জি ,ফুটো মোজা ,পোঁদ ফাটা জাঙিয়ার যেন কোন চাহিদা থাকতে নেই !
শুকনো খড়ের গাদায় শুয়ে তুমি বিড়ি ধরাও আর আপামর ঘুনপোকাদের টেন্ডার ছাপো।
তোমার মহার্ঘ উদাসীনতায় ব্যাঙেরা লাফিয়ে লাফিয়ে পেচ্ছাপ করুক।
তুমি শোঁকো আর মোহিত হয়ে যাও।
(জলদাস)
এমনভাবে টানছো যে আর ধরে রাখতে পারলাম না
পড়ে গেল ভেঙে গেল
মোহান্ধ দর্পণ
আর সেই থেকে
আমার প্রেতচ্ছায়া কে বাঁচিয়ে তোলার
তুক্তাক
গূঢ় পদ্মকলা
প্র্যাকটিস করে চলেছি
থাপ্পড় মারলে আর ফিরিয়ে দিচ্ছি না থাপ্পড়
থুতু ফেলছি আর
গিলে নিচ্ছি
বিষদাঁত
এ জন্যেই পাঁচআনা সাতআনা খর্চা করে দেবালয়ে
এসেছি। ঘামধূলো বাস পথে চুলবুলি বরফ খেলাম আর
জানলায় হাত গলিয়ে প্ল্যাস্টিকের জল । অন্নত্রাস মধুমেহ, শরীরে
আসীন বহুকাল। সিঁড়িভাঙা উরুচাপ, তার ফলে, সামলাতে
পারিনি, হে প্রভু। আমি যখন ভাসিয়ে যাচ্ছি তখন সমান্তরালে
লাথিঘুষিকিলচড় বর্ষণ চলেছে। কতোবার ককিয়ে উঠলাম, হে ভক্তসকল,
লজ্জাময় চোখের জলও তো ঝরে যাচ্ছে আকুলিবিকুলি !
অলিতে গলিতে এতো ডায়গোনিস্টিক সেন্টার, একবার, ওগো একবার
এ জলে সে জলে মিলেমিশে, অবিভক্ত বাংলার জলধারা
কীভাবে যে বয়ে চলে, জলের পৃথক ঘ্রাণ, জলের অস্তি বিচার
প্রভু, আপনি আদেশ করুন, যেন নিরূপিত হয়। হে প্রভু, যাচাই করুন
ঈষৎ লবণাক্ত, ঈষদুষ্ণ, দুই জল, একক শরীর থেকে নির্গত কি না !
দুটোতেই বড়ো তীব্র বেগ ও বেদনা, প্রভু -একবার সমঝিয়ে যান।
— টুকরো টুকরো দ্বীপগুলো নিয়ে তুমি কি করবে ভাবছো ?
জোয়ারের অপেক্ষা করবে
না কি হস্তান্তর চুক্তির জন্যে বসে থাকবে ?
—আমি এই মুহূর্তে দ্বীপের কথা ভাবছি না
সিঁড়ির কথা ভাবছি -সিঁড়িকাঠের কথা
ওই যেটা মাঠে পড়ে আছে
আল বরাবর পড়ে আছে
এখন কুয়াশায় ভিজছে আর একটু পরেই
রৌদ্র শুকিয়ে যাবে বলে
—কোথাও সংযোগ নেই, তবু তুমি
সিঁড়ি ছুঁয়ে আছো !
এ কেমন বাতুলতা -এ কেমন অসুখ মহিমা !
—নেই যদি, কিছুই নেই
দ্বীপগুলি রয়েছে কীভাবে
—জল বড়ো ইতিহাসপ্রবণ
জল বড়ো স্নেহ নিম্নগামী
জলই রেখেছে ধরে
আলাদা আলাদা করে— দূরে কাছে
বিষণ্ণ প্রলাপ
—নুইয়েছি কাঁধ, সিঁড়ি উঠে এসো
উঠে এসে দুলে, স্থির হও
ভারসাম্যের খেলা, একটু হলেও, জানা আছে
দেয়াল ও দিগন্ত জুড়ে হাত বিছিয়েছি
বিচ্যুত হয়ো না, সিঁড়ি, শববাহকের অভ্যাসে
এসো সিঁড়ি জল ছুঁই এসো কাঠ জল ছুঁই তারপর ডুবে যাবো বলে
—আসুক জোয়ার তবে
সিঁড়ি নিয়ে নেমে যাও জলে
আমিও দ্বীপের ডগা কতখানি হলে ডোবে দেখি
—জলেই অনন্ত শ্রম জলেই বিপুল উদ্গম
জলেই পৃথিবী লয় জলেই কুবের সেই মাঝি
জলই সঠিক টানে জলই সহসা ছেড়ে দেয়
জল মনোলগ শুধু জল বোঝে নইলে আকাশ
—হ্যাঁ, জলগণক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হয়েছে।
ছাত্ররা এসো, ছাত্রীরা এসো। এসো মানে ডুবে যাও।
যেরকম ডুবলে, ডুবে ডুবে জল খাওয়া যায়না, সেরকম ডোবো।
এই ডোবা সীতার মতো লজ্জা পেয়ে নয়, এমনকি
যে ঘটি ডোবেনা সেরকম নীল সাদা অসভ্যতাও নয়।
প্রাকৃত এ ডুবে যাওয়া, শিক্ষণীয়, শিখে নাও, অগভীর কতটুকু।
নিয়মিত শিক্ষা-নিরীক্ষায় বুঝে নাও, গভীর হে গভীরতা
আসলে কতটা বড়, আসলে একটা পথ, যত যাবে, তত চাপ
যতবার তল ছোঁবে পা, তৃতীয় দর্পণ ফেলে দ্যাখো
ততদূরই বিস্তৃত রয়েছে সম্ভাবনা।
জল কত আলোময়, অন্ধজল পেরলে, জানবে।
(ত্রিযামা)
আলোছায়ার খেলাটা এরপরেই শুরু হয়েছিলো। কিছুই
আর আগের মতো রইলো না। শুধুমাত্র কিছু
বিকেল পড়ে থাকলো, যেগুলোর ভাগবাঁটোয়ারা করতে পারেনি
স্মৃতি অথবা সুড়ঙ্গ। সম্ভবত তখনই তোপধ্বনি হলো আর
হাততালি দিলো ভাঁড় ও কর্পোরেট একসাথে। তুমি আজও
ফিরতে পারলে না অথচ কোথাও কোনও টিকিট চেকার
ছিলো না কিন্তু।
এ জন্যেই বলি, সবকিছু আগে থেকে প্ল্যান করোনা।
রাস্তার ম্যাজিক রাস্তায় ঘটবেই। কেউ এগিয়ে
হাঁটছে আর কেউ ছায়া হয়ে থাকছে। পিছু যা নেয়
তা কি সর্বদাই নজরদারি না কি অসুখ -এই
দ্বৈত অনুপস্থিতিও দগ্দগে কাটা ঘা হয়ে ওঠে।
তার ছিঁড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন। তুমি গোমড়া হয়ে
বসে থাকছো আজকাল একটু বেশী। চেয়ারে কাপড়গুলো
ডাঁই হয়ে থাকছে। বইগুলো হারিয়ে যাচ্ছে আর
লিখে রাখা কাগজে দুর্লঙ্ঘ হচ্ছে চৌকাঠ।
এর সাথে সম্পর্ক নেই, এমন সব সম্পর্কগুলোর নালিশ
ঘ্যানঘ্যান করা শুরু করতেই, তুমি শিরা কেটে ফেলার
ট্যাকটিক্স শিখে ফেললে। তখন ট্রেনের পাশে ট্রেনের শব্দ এসে
ঢেকে দিচ্ছিলো সব।
কাজেই, আর পাকামো মেরোনা, এসো, রফা করে নি।
রুমাল কাচারও একটা নির্দিষ্ট সময় থাকে। শুধু নিজেকে হত্যা
করার কোনও অনিবার্য ডাকঘর নেই। অবশ্যম্ভাবী শব্দটা
প্রলয়ের দিকেই ঠেলে দিচ্ছে বারংবার আর তুমি
মাছের বাজারে ঘুরে ঘুরে রক্তের মাখামাখি দেখছো।
নর্দমায় তেল ঢালা হয়েছে ফলে মশারাও
অভিযোজনের নতুন সিলেবাস চালু করলো।
তোমার পাশে এমন লোকের সংখ্যা কমছে
যারা অনেক বই পড়ে আর চুপ করে নখ খায়।
মেয়েটা একা জলের ধারে গিয়ে বসেছে, তুমি কি তাকে টেনে ধরবে না
ঠেলে দেবে -ভাবতে ভাবতে ছাগলের পাল এসে তোমার
মোজা খেয়ে গেলো।
সম্পর্ক ব্যাখ্যাতীত হলে, কানাঘুষোর রমরমা বাড়ে।
মাছি আর পুঁজের আঁতাত, সব মোর্চা স্থাপত্যের
অতিবৃদ্ধ প্রপিতামহ। শেষ দেশলাই কাঠি বেশি
জোরে ঠুকতেই নেই -তুমি এরকম জেনেছো।
অবলম্বন একটা থাকবেই। কুকুর মুতবেই ল্যাম্পোষ্টে।
ভিখিরি ও বেশ্যা স্বাভাবিক জীর্ণতায় আর আরোপিত
রঙের হুল্লোড় নিয়ে নিজেদের এগিয়ে দেবে। সেভাবেই
দেওয়ার জন্যে হাতগুলো, আর কিছুই হাতকে দেবে না
শিরদাঁড়া কে দেবে। পাথর গড়াবে, বালি চুরি হবে
বরফ ভেসে ভেসে গলে যাবে। আর তুমি
ওপড়ানো গাছের পাশেই বসে থাকবে, একা।
হাসপাতাল, আসলে আরোগ্য -অ্যাপ্রণের বিছানা
যেখানে যন্ত্রণার ওডিকোলন মেখে, অতিবাহিত ক্যালেন্ডার হয়ে
পড়ে থাকে শরীর। সদর দরজার বাইরে যে দোকানদার
একগাল হেসে, অভ্যর্থনা জানায় তোমায়, তুমি বরং
তার সাথেই আবহাওয়া বার্তা বিনিময় করও। অনশ্বর জল বলে যদি
কিছু থাকে, তবে তুমি তার দেখা পাবেই।
আপাতত একটু ঘোরও, একটু ভিতর দিকে
ঘোরও।
কে উঠে চলে গেল, কে এসে বসছে, জনাকীর্ণ ষ্টেশনের
বেঞ্চ। তার মনে রাখার কথা নয়। এমনকি, এটাও তো ঘটনা,
সবকটা মুখ তো আর ভেসে ওঠেনা। স্বপ্নের আততায়ী
ঘুমের আততায়ী তো একটিই ধৌত মুখ। এরপরেই আঙুল
তোলে অবিনাশ ব্যানার্জ্জী নির্জন লেন। ভ্রূণ হত্যার দায়ে
ফাঁসিকাঠের দিকে ঠেলে দেয় সে গলির অবরূদ্ধ বাতাসিয়া হাহাকার।
বারবার এভাবেই হোঁচট খেয়ে টাল সামলাতে চায়
ঘুরিয়ে দেওয়া লাট্টু। আর কিছু মনে রাখতে না চাইলেও, তোমার
সব মনে থাকে। তখন চারপাশের নীলসাদা অসভ্যতার সাথে পাল্লা দিয়ে
তোমার স্মৃতিরাও যেন পাল্টা নিহিলিস্ট।
হাত ছাড়িয়ে ছুটছে , যাকে খুশি তাকে ধরে আনছে
এলোপাথাড়ি চাবকাচ্ছে তোমায় আর
সেই হিস্হিসে জবান আছড়ে পড়ছে –
বলো, দায়ী নও?
দায়ী নও?
প্রত্যুষ বন্দ্যোপাধ্যায়
জন্ম ১৯৬০, নিবাস, পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা, ভবানীপুর। স্বাক্ষর। সম্পাদিত পত্রিকা – শব্দ, ক্যানেস্তারা। প্রকাশিত কবিতার বই – অব্যয় সংহিতা (ধানসিড়ি) প্রকাশিতব্য – ক্যাজুয়াল স্বৈরতন্ত্রী (অক্ষরযাত্রা)।
এই লেখনীর শব্দদূত কখনো অক্ষরের পাগলামি শেখায়, কখনো চেতনা ফেরায় চাবুকের অনবদ্য ঝঙ্কারে। আভূমি কুর্নিশ জানালাম।