ভালো আছি

।। দেবাঞ্জন দাস ।।

যারা ধানক্ষেত হয়েছিল
কাজু বাদামে লিখেছিল কত মিথ্যে শব্দ
সব দৌড়ে মিছিল হবে
হাঁসগুলো ঝাঁপ দেবে পুকুরে

১.

রাত হওয়া চোখ জানে না
দেখাগুলো সাজিয়ে উড়ছে পৃথিবী
বৃষ্টি পড়া
লালগুলোকে লাল বলে চেনা
সবই সাজাতে সাজাতে
কেউ পথের পাশে ঘুমিয়েছে
কেউ ধান রুইছে দোপাটিকে সাক্ষী রেখে
আচমকা ছবি শেষ হলে
যদি চোখের পলক পড়ে
তাহলেও কি বুঝবে না
সবকিছু সাজানোই ছিল
কেবল স্ক্রিপ্ট থেকে পাখিটা উড়ে
ঠোকর দিয়েছিল পর্দায়…

২.

এই গুঁড়ি বৃষ্টিতে
ভালো আছি
দূরের প্যাস্টেল গলানো রাস্তায়
আনটাটকা পেলব হচ্ছে
ইচ্ছে হয় ঢালাই দেই
নুনু কামান হোক একটা
এত অস্ত্রশস্ত্রের দেশ!
বেঁচে থাকাকালীন একটা চিঠি লিখে যাই
ভেজা রাস্তায় ইতিহাস
ধুলো হওয়ার আগে
নিশ্চয় চলাফেরাগুলো নজরবন্দী হবে
জিজ্ঞেস করবে
কটা বন্দুক?
কটা নুনু কামান?
কতগুলো মটরদানায় জাগালে রাত?
কেন যে স্বপ্নের সিংহ-শিকারে ঘোড়াগুলো বেদম দৌড়য়…

৩.

অল্প হতে হতে আকাশ নিয়ে উড়ছে পাখি
আমাদের হেঁটে যাওয়ার জন্য
যারা ধানক্ষেত হয়েছিল
কাজু বাদামে লিখেছিল কত মিথ্যে শব্দ
সব দৌড়ে মিছিল হবে
হাঁসগুলো ঝাঁপ দেবে পুকুরে
ঠিক মনসা বলতে বলতে
আমার মেয়েটা একদিন মানুষ বলে ফেলবে
গুন্টিং হবে গুড নাইট
তবু গেরোবাজ
আকাশকে মাপার ফিতে শেষ হলে
ফরসা হওয়ার ক্রিম ঘসবে রাতের গালে
যেন বেদনার ভাইপো হবে এক লাল টুকটুকে
হেঁটে যাওয়াকে স্যালুট করবে ঘাসেরা
আর কেউ জানবে না
দুনিয়াদারি বললে আজও আমার মুখে
শ্যামাপোকা ঢুকে যায় আচানক

৪.

ভালো বলার আলো
চুঁইয়ে যাচ্ছে
বেড়াল পৃথিবীর গলাতে
না-দেখা দেশের ছায়ায়
বড় হচ্ছে আমার বিকেল
সেখানে শব্দ পড়লে উঠোনের তার কেঁপে যাবে
এই ভেবে কুলগাছকে কত না বকাবকি
যেন সব লাল হো যায়েগা
ঘোড়ায় চেপে বেড়াতে গেছে
আর বেড়ালে রাস্তা কেটেছে বলে
ঘোড়াটা দাঁড়িয়ে আছে মেঘের উপর

ছবি- লুবনা চর্যা

দেবাঞ্জন দাস


পশ্চিমবঙ্গের শূন্য দশকের কবি। জন্মসাল ১৯৮০। ‘বৈখরী ভাষ্য’, ‘ইন্ডিয়ারি’-এর মতো পত্রিকা-ওয়েবজিন সম্পাদনার সাথে ওতপ্রোত জড়িত ছিলেন। বর্তমানে ‘অপরজন’ পত্রিকার কার্যকারী সম্পাদক। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্রবিদ্যা বিভাগের এই প্রাক্তনী কলকাতার দৈনিক সংবাদপত্রে নিয়মিত চলচ্চিত্র বিষয়ক কলাম লিখেছেন, স্বল্পদৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র এবং তথ্যচিত্র পরিচালনা করেছেন। চলচ্চিত্র ও কবিতার আন্তর্সম্পর্ক নিয়ে নিয়মিত লিখেছেন পত্রপত্রিকায়।

প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: ‘চেনা আনফ্রেম’ (২০০৯, বৈখরী ভাষ্য প্রকাশনী, কলকাতা), ‘বিল্লিবাদল’ (২০১৪, বৈখরী ভাষ্য প্রকাশনী, কলকাতা)।

Share