আজ বৃহস্পতিবার, ১লা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বড় বাংলার সাহিত্য

।। সম্পাদনা বিভাগ।।

আবার ‘প্রতিপক্ষ’ নতুন ভাবে বার করবার চেষ্টা করছি আমরা। কাগজে ছেপে সাহিত্য পত্রিকা হিশাবে প্রকাশের আর্থিক সাধ্য আমাদের নাই। কিন্তু ডিজিটাল জগতে ইন্টারনেটের মেঘের মধ্যে ভেসে থাকার চেষ্টা তো করতে পারি। তাই না?

আমাদের এবারের উদ্যোগের গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে  কাঁটাতারের বেড়ার দুইপাশের বাংলাভাষীরা মিলে ‘প্রতিপক্ষ’ প্রকাশ করা। এই ক্ষেত্রে কৃতিত্ব যদি কাউকে দিতে হয় সেটা কবি অতনু সিংহের পাওনা। তাই এই উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে যাবার দায় কবি অতনু সিংহের,  আমরা সানন্দে সেই দায়িত্ব তার ওপর অর্পণ করলাম।

অতনুর সুবাদে রূপসা রায় ও বৈশালীর সঙ্গে আমাদের পরিচয় এবং আমাদের যুক্ত হওয়া। আমরা মানে এর আগে বাংলাদেশ থেকে যারা প্রতিপক্ষ বের করতাম তারা সবাই। সবার পক্ষ থেকে নতুনদের অভিনন্দন। বৈশালী এবার অলংকরণে বিস্তর সময় দিয়েছেন। তাঁকে ধন্যবাদ।

মোহাম্মদ রোমেল সব সময়ই প্রতিপক্ষের কোন না কোন কাজের পেছনে সক্রিয় ছিলেন, থাকেন এবং থাকবেন। তাকে বাড়তি থ্যাংকু বলা অপচয়। এছাড়া রয়েছেন রূপসা রায়, ফ্লোরা সরকার এবং তাসমিয়াহ্‌ আফরিন মৌ এবং ফরিদা আখতার। তাঁদের সময় ও চেষ্টা ছাড়া আমরা প্রতিপক্ষ নতুন ভাবে বের করতে পারতাম না। কাজের মধ্য দিয়ে আমাদের চিন্তার ঐক্য এবং হৃদয়ের বন্ধন ক্রমে আরও দৃঢ় হবে।

‘প্রতিপক্ষ’র সম্পাদনা নীতি কি হতে পারে তা নিয়ে আমরা এবার আবার নিজেদের মধ্যে যথেষ্ট আলোচনা করেছি। আগামিতেও করব। প্রতিপক্ষের ইতিহাস — এতোদিন কি ভেবেছি কি করেছি, ইত্যাদি —  সবিস্তারে  ‘প্রতিপক্ষ ও ‘সাহিত্য’’ লেখাটিতে আমরা বর্ণনা করেছি। ‘প্রতিপক্ষ’ নিয়ে আমাদের ভাবনা -চিন্তার প্রাথমিক পাটাতন এই লেখাটি।  প্রতিপক্ষ এতোদিন কি ভেবেছে, ভাবছে এবং আগামিতে ভাবনার সম্ভাব্য রূপ কী হতে পারে — সেটা আশা করি পাঠক এই লেখাটিতে পেয়ে যাবেন। আমরা কি অর্জন করতে চাই সেটাও আশা করি এই লেখা থেকে বোঝা যাবে।

কি চাই?  কথাটা যদি খুলে বলি, তাহলে আপাতত চাই ক্ষতস্থানের নিরাময়। যে ক্ষত ইতিহাস তৈরি করেছে, যার ওপর আমাদের কোন হাত ছিল না, তা দ্রুত সেরে উঠুক এটাই আমরা চাই। বাংলাভাষীদের পরস্পর থেকে দূরে ঠেলে দেবার যে প্রক্রিয়া জারি আছে আমরা তার উল্টাটা করতে চাই। আর সাহিত্যের চেয়ে মহৌষধ এই বিশ্ব সংসারে কীইবা হতে পারে!  নিরাময়ের জন্য  বাংলার ভাব ও ভক্তির জগতে প্রচুর ওষুধ মজুদ রয়েছে।  তাই  সবার আগে আমরা চাই ক্ষতস্থানগুলোর  হা-করা মুখ সেরে উঠুক।  আমরা তাই দাবি করি ‘সাহিত্য মানে সকলের সহিত সম্বন্ধ স্থাপন, অপরের মধ্যে বিরাজ করবার বাসনা। সাহিত্য এই চাহিদাটূকু আমাদের মেটায়। এই ভাবটুকু আমাদের কল্পনা, ভক্তিা আর বুদ্ধির আশ্রয় হয়ে উঠুক।

প্রতিপক্ষ শুরুতে এটাই চাইছে যে সারা দুনিয়ার বাংলাভাষীরা আরও বৃহৎ পরিসরে  নিজেদের কল্পনা করতে শিখুক, ভাবতে শিখুক – তার জন্য দরকারী কাজগুলোই আমরা করতে চাই যে কোন মাধ্যমে ‘সাহিত্য’ চর্চার মধ্য দিয়ে। কারণ ‘সাহিত্য’ মানে অপরের সঙ্গে সম্বন্ধ পাতানো, অপরের মধ্যে আমি এবং আমার মধ্যে অপরকে ডেকে আনা। বাংলাকে আরও বড় ও বৃহৎ বৃত্তে ভাবতে শেখা। তাই আমরা বলি, প্রতিপক্ষ হচ্ছে ‘বড়বাংলার পত্রিকা’। বাংলাভাষী– ভূগোলের সে যেখানেই থাকুক, সাহিত্য চর্চার মধ্য দিয়ে তার জগত আরও ‘বড়’ হোক। সেটা আসলে ওপরে নীচে বামে দক্ষিণে মিলে বিশাল। আমরাই তা ভেঙে খণ্ড খণ্ড করছি। বাংলাভাষীদের মধ্যে আগে সম্বন্ধের বিকাশ ঘটুক, এরপর উপমহাদেশ এবং তারপর সারা বিশ্ব যেন আমাদের আবাসে পরিণত হয়। আজ বাংলা যা ভাবে সারা বিশ্ব যেন তা পরদিন ভাববার ক্লু পেয়ে যায়। বড় নিয়ে আমাদের সাধনা, যেন আমরা বড় হতে পারি। তাই ‘বড় বাংলা’।

আমরা ঠিক করেছি, যখনই দরকার আমরা বিভিন্ন বিষয় নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে নেব। যেন ‘আমাদের কথা’ হিশাবে বিভিন্ন বিষয়ে প্রয়োজনে আমরা আমাদের বক্তব্য পেশ  করতে পারি।

আমাদের যে সকল ক্ষেত্রে দক্ষতার অভাব আছে তা পূরণের জন্য আমরা আমাদের অন্যান্য বন্ধুদেরকেও আমাদের সাথে হাত মেলাবার জন্য আমন্ত্রণ  জানাচ্ছি। আমাদের কাজ করবার দল প্রয়োজনে আরও বড় হবে। এর আগে প্রতিপক্ষে যারা সক্রিয় ছিলেন তাদের সবার সঙ্গে এখনো যোগাযোগ ও কথাবার্তা বলা হয়ে ওঠে নি।

আমরা ধীরে ধীরে আরও অনেককে যুক্ত করবার আশা রাখি। শুরুর পদক্ষেপে অনেকে অভাব ও ত্রুটি থাকবে। আশা করি আমরা তা ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠতে পারব।

ফরহাদ মজহার
প্রধান সম্পাদক, প্রতিপক্ষ

Share

1 thought on “বড় বাংলার সাহিত্য”

  1. আগে ধর্মীয় ভেদাভেদ ঘুচিয়ে দুই বাংলার এক সংস্কৃতিকে আরও সমৃদ্ধশালী করার কাজে এগিয়ে যাওয়া দরকার। মৌলাবাদের বিরুদ্ধে লড়াই নিরন্তর চলুক। জায় বাংলা, জয় বাঙালি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top