।। পৌলমী গুহ ।।
কখনও বুঝিনি সে উঠোনে
আরেকটা দেশ এসে দাঁড়াবে,
আর আদরের সুবাসে
মিশে যাবে ঘর-পোড়া ঘ্রাণ!
ঈশ্বরের প্রতি
এ জন্ম কীট-জন্ম নয়।
এই ভেবে বিস্ময় জাগে,
মাতৃগর্ভের অন্ধকার থেকে
এক নিষ্করুণ আলোয় আসা হয়।
দাবানলের পরে
সম্মুখে যুদ্ধক্ষেত্র,
সেখানে হিংসা ও ক্ষমা পাশাপাশি
একে-অপরের প্রতি কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ।
কত গান
সুর হয়ে ঝরে পড়ে ভিড়ে।
কত ভিড়
আনন্দ হয়ে ভেসে চলে।
তোমার মন্দির বহু প্রাচীন,
নক্ষত্র ও নদীতে
তুমি আসন পেতেছিলে কেন
জানে না কেউই।
তবু তোমাকে আশ্রয় করে
প্রতিটি তারা
আশিস হয়ে জ্বলে থাকে আজও।
আমাকে বিস্মিত রেখো,
এইটুকু স্রেফ চাওয়া।
ঘর ও উঠোন
আমাদের দেশ ছিল।
সেখানে নদীটিতে ছিল ঢেউ,
সকালে ছিল নিষ্পাপ শিশির।
মা ভাতের থালায় বেড়ে দিত
দু’ফোঁটা আদর আর কাঁচালঙ্কা,
উঠোনের গাছ থেকে।
কখনও বুঝিনি সে উঠোনে
আরেকটা দেশ এসে দাঁড়াবে,
আর আদরের সুবাসে
মিশে যাবে ঘর-পোড়া ঘ্রাণ!
সাময়িক ক্ষত
শিরায় যে ধর্মীয় বিষ ছুটছে,
যে ধোঁয়ায় রক্তকে মনে হয় রাজটিকা
তা থেমে যাবে।
আপাতত যেখানে মাথা ঠেকানো চলে,
একদিন সেখানে প্রিয়জন থাকবে
কুৎসিত মৃত্যুর মতোই।
সেদিন রাজার গদিতে
অন্য একজন রাজা।
আর হাতের তরবারির ওজন
কয়েক গুণ বেশি হবে।
শেষ পোঁচ নিজের পাঁজরে,
এই হয়। এই হবে।
আজকাল বড়ো বেশি
বেঁচে থাকাথাকি।
বেঁচে থাকা
বেঁচে আছি জানাতে,
রোজ অনুকরণ
নয় চিৎকার
নয় কিছু একটা এমন…
বেঁচে থাকতে যার প্রয়োজন নেই!
পৌলমী গুহ
নিবাস পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার। ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। বর্তমানে কোনোও পেশায় যুক্ত নেই। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ, ‘শিশির শিকারের পর’।