।। অগ্নি রায়।।
তাকে ঘিরে ধরেছে পাড়ার সেই সত্তর দশকের পালানো যুবক, চাঁদ যার ছুরিতে শান দিত প্রথম রাতে। যাকে সে কোনও বিপদ-গলির মোড়ে ঠেলে দিয়ে আজ সফল পোশাক পরেছে। বৈশাখের সে দিনের সেই অট্টহাসি তার কানে পৌঁছে গিয়েছে। নিজেকে হারাতে গগনে গগনে আপনার মনে আজ তার শেষ ইনিংস
এক
আমার সকল নিয়ে বসে আছি তবু শেষ মেট্রো পৌঁছায় না। নির্জন স্টেশনে শুধু কালান্তক নির্জনতা। আড়াল থেকে ভালবাসার জন্য পড়ে স্মৃতির এঁটোকাঁটা। কে ভাসাবে এত রাতে যদি না আসে ফেরার ট্রেন। গোণা সিঁড়ি বেয়ে উঠে বাইরের পার্ক আরও একলা। বোধহয় মৃত বন্ধুকে তার গোপন ভালবাসাবাসিটুকু দেওয়ার জন্য আড়াল গড়েছে। চাঁদের মতো অলখ টানে জোয়ার তোলা সেই অলৌকিক দৃশ্যের কাছে গিয়ে কেই-বা গিয়ে দাঁড়াতে পারে আজকের বাজারে, শেষ মেট্রো মিস হয়ে গেলে
দুই
অনেক দিনের আমার যে গান আমার কাছে ফিরে আসে তাকে এক লহমায় আর চেনা যায় না আর। তার এখন কোনও পসার নেই, মাথায় নেই সেই কাঁথার মতো চুল। যে বাতাসে সে ঘুরে বেড়ায় সেখানে ধান্যগন্ধ নেই, অকারণে হেসে ওঠার কারণ নেই কোনও। নোটিস ঝুলেছে বাড়িতে, ছেলে মেয়েকে নিয়ে সে কোনও প্রদীপ্ত মাতালের হাত ধরতে যাবে এবার। সকল গৃহ হারানোর আগে একবার সে ফিরে এসেছে আমার কাছে। ভোলা দিনের বাহন খুঁজতেই বোধহয়
তিন
গগনে গগনে আপনার মনে আজ চালিয়ে খেলছে মেঘ। সে জানে বেলা পড়ে আসছে, হাতে বেশি সময় নেই। তাকে ঘিরে ধরেছে তার পরাণসখীরা। তাকে ঘিরে ধরেছে পাড়ার সেই সত্তর দশকের পালানো যুবক, চাঁদ যার ছুরিতে শান দিত প্রথম রাতে। যাকে সে কোনও বিপদ-গলির মোড়ে ঠেলে দিয়ে আজ সফল পোশাক পরেছে। বৈশাখের সে দিনের সেই অট্টহাসি তার কানে পৌঁছে গিয়েছে। নিজেকে হারাতে গগনে গগনে আপনার মনে আজ তার শেষ ইনিংস
অগ্নি রায়
জন্ম ১৯৭০। আনন্দবাজার পত্রিকায় দিল্লির সহকারী সম্পাদক। কবি ও অনুবাদক। কাব্যগ্রন্থ পাঁচটি। অনুবাদ, আফ্রিকার ছোট গল্প সংকলন এবং সাহিত্যে নোবেল বক্তৃতার সংকলন, সোহা আলি খানের লেখা বই ‘স্বল্প খ্যাতির বিড়ম্বনা’। সম্পাদনা, সেলিনা হোসেনের মুক্তিযুদ্ধের গল্প। সাহিত্য আকাদেমির জার্নাল ‘ইন্ডিয়ান লিটারেচার’-এ প্রকাশিত তাঁর কবিতার অনুবাদ। পেয়েছেন বিজন ভট্টাচার্য স্মৃতি সম্মান। পেশাসূত্রে সফর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।
ভাল। স্নিগ্ধ। ছুরিকেও জ্যোৎস্না মনে হয়।