আজ বৃহস্পতিবার, ১৫ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩১শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

অবিশ্রান্ত মায়া কোলাহল

।। সৌরভ গুহ ।।

আলো, এ গভীর আর্তস্বর তুমি পথ জ্বেলে দিও
ওই যে বেশ্যা, ভোট লুঠকারী, মাংসদানব, সূত্রধর, বয়ানবিন্যাসী
ভেলকি খলিফা, চৌর্যকুবের ধনসন্ত্রাসী বিষণ্ণ বন্ধুকবাজ
এদের দেখনি তুমি গ্লোসাইনের আবডালে?

বিষণ্ণ বন্দুকবাজ

এই অরণ্যমর্মর এই কোলাহল সদৃশ প্রান্তররেখা কি তুমি প্রার্থনা করো ?
অজুত টার্মিনাসে ঘুমিয়ে আছে বয়েসের মমি প্রলাপের অক্ষর চিহ্ন
চর্মপুতুলা আমাদের জন্ম কি তবে শুধু মাংসের হাতযশ
শরীর গেঁথেছ সে অবিরাম ধারণ পরম্পরা
ফুলের ব্যাকরণ তন্তুর সচকিত উন্মেষ
এ তোমার ? তুমি মানে প্রবাহের যেটুকু আগল
তোমায় সৃজিল।

এখানে আকাশ ক্রমে ধূসরতর রঙিন আর মীণ সরোবরময়
ফুলজ তুমি রেনুসারাৎসার প্রক্ষিপ্ত পরবাসে
পুত্‌লা তুমি ধাতুকণা তুমি সরসে জারিত
তাম্রপত্র, ভূর্জপত্রে সে তোমার আদিম প্রপিতামহ
তুমি দিগন্ত দেখ না, তুমি পরিযায়ী এসেছ মুহূর্ত যাপনে
এ সঙ্গীতময় নীরবতা তাঁবু ফেলুক। আমাদের যুদ্ধবিরতি
আলো, এ গভীর আর্তস্বর তুমি পথ জ্বেলে দিও
ওই যে বেশ্যা, ভোট লুঠকারী, মাংসদানব, সূত্রধর, বয়ানবিন্যাসী
ভেলকি খলিফা, চৌর্যকুবের ধনসন্ত্রাসী বিষণ্ণ বন্ধুকবাজ
এদের দেখনি তুমি গ্লোসাইনের আবডালে ?

আস্তানায় অন্ধকারে যাদের কুলুঙ্গিতে পূজা নেন সার্বজনীন ভগ্‌মন
ভগ্‌মন এই আর্তিনির্মাণ জুড়ে এক সমর্পণ-সাম্য
দ্বন্দ্বরৈখিক জনসমাহার ঘোরে প্রহেলিকায় জেগে থাকার মকশো করে চলে

আলো তুমি চাক্ষিক উল্লাস আঁধার সমাকীর্ণ !

ছাদবাগান

মানুষের ভিতরের চাষবাস কেন ভুলেছে মানুষ?
উদ্ভিদ প্রবণতা
ছলাৎ ফুটে ওঠে প্রত্নজন্ম আত্মীয়-স্বভাব

বপন হেতু তার অবিশ্রান্ত মায়া কোলাহল
আমার ছাদে আজ অফুরান আকাশ আকাশ
দ্যাখো তুমি মুদ্রাদোষে মাটিতে ছোঁয়ালে বীজ
অকৃপন দানে ম্লান করে কৃত্রিম তোমার

পড়শি

তোমার পিঠে জেগে থাকা ব্রায়ের লুকোচুরি
আমাকে রাখাল বানায় আলো-আঁধারির
ব্যালকনি জুড়ে ঘনিয়ে এলো কিছু প্রাচীণ অরণ্য ছায়া
প্রবাদের মতো অভিশপ্ত বিগত সংক্রমণ
তোমাকে মনে হলো রাইকিশোরী

এ সব খেলো কেন ?
বুক চিরে ক্রমে জেগে উঠছে ভ্রম

আমি যেন পলাতক পোষ্টম্যান এক
অপটু অক্ষরে লেখা চিঠি জামার ভাঁজে
লুকিয়ে রেখেছি আজও।

জন্মের দাগ

মেনে নাও এসব পরাজয় জন্ম-জরুলের মতো
তুমি নিজেই এনেছিলে পরিভ্রমণকালে পটভূমি জুড়ে
যেখানে জীবন নামে এক মিথষ্ক্রিয়া জেগে থাকে
আমি কেন মন খারাপের কথা বলি অনবধানে
মাঠ পেরিয়ে গান হবে বলে যে পথ হাঁটে ভ্রাম্য ইশারায়
তাকে তুমি সম্বতি দিও, গ্রীষ্মের বিকেল দিও
অপচয়ের সাহস দিও হে, কিছু মুদ্রাদোষ দিও

ওকে ডেকো না, ওর ধ্যান ভেঙ্গে যাবে, নেশা ভেঙ্গে গেলে
এ অস্থি-মজ্জা-ইঁট ও ঈশ্বর নামের কিছু অভ্যাস আয়োজন

ওকে গিলে খাবে।

গঞ্জ

ছোট নদীর দুঃখপ্রবণ এ নির্জন জনপদে
ভাতের হোটেল তোমার। আদরপ্রবন ক্ষুধাশিল্প
খেতে আসে যারা তোমার নিয়তিতাড়িত বন্ধুসব
কলমি শাক খায়, রুইয়ের মাথা, সজনে আলু
গলে যাওয়া রোদে গল্পের গরস মুখে ওঠে
সম্পর্ক সদাগর তুমি পদাবলীর মতো স্নেহজ
তোমার মলিন গাথায় আমলকির ঘ্রান
এইসব দুঃখশিল্প নদীটির নিজস্ব আখ্যান যেন
নদী কি তোমার পিতা, বোঝা বয়, দুঃখভার বয়

বুকের ভেতর চারিয়ে দিয়ে যায় আমলকী বন!

সৌরভ গুহ

পেশায় টেলিভিশন সাংবাদিক । নিউজ লেখেন, ফিচার লেখেন । কবিতা লেখেন । প্রকাশিত হয়েছে রম্য রচনার বই ‘চেনা নেতা অচেনা নেতা’। সম্পাদিত পত্রিকা ‘কবিতা কারিগর’। ২০১০ সালে প্রকাশিত হয় কবিতার বই ‘কলোনির কবিতা’। কালীঘাট পটুয়া পাড়া নিয়ে বানিয়েছেন তথ্যচিত্র ‘নগর পটুয়া’। খবরের পাশাপাশি টিভি চ্যানেলের জন্য বানান ডকু ফিচার ।

Share

1 thought on “অবিশ্রান্ত মায়া কোলাহল”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top