।। বায়েজিদ বোস্তামী ।।
১
এমন দুপুর বয়ে যায় ভবে
রুখোশুখো এই শীতকেলে দিনে
রোদের আরাম আসে বেলা চিনে
রোদ বেড়ে গেলে, বুঝলে, তিতির
কুটকুট করে খুশকি খুলির
এহেন বিপদে খালি মনে হয়
বিলি-কাটা আঙুল সে কোথা রয়
বিলি খেতে খেতে ঠোঁট থেকে ঝরা
কথা গিলে নেবো শালিকের পারা
খোঁজ পেতে পারে সুগোল আঙুল
একটা কি দু’টো রূপো-রঙা চুল
মকর জাতক, মাঘ মাসে মাসে
গিঁট বেড়ে যায় বয়সের ফাঁসে
এমন দুপুর বয়ে যায় ভবে
শুয়ে শুয়ে ভাবি, কবে আর হবে
২
দ্বিধাগ্রস্ত পায়চারি
অই যে, ওখানে
যেখানে লোকেরা ভিড় করে আছে
সেখানে আমিও যাবো?
নাকি যাবো না?
মৌচাকের আরেকটি মৌমাছি হবো?
নাকি হবো না?
সমূহদ্বিধা নিয়ে বারান্দায় পায়চারি করতে
করতে
করতে
করতে
ফুরোলো সকাল এবং দুপুর
ওদিকে মৌ বুঝিবা ফুরোলো
আহা, শর্করা তাও দরকারি
এখন আমি যাবো ?
নাকি যাবো না?
এভাবেই বিকেল নামবে ও ফুরোবে
এভাবেই সন্ধ্যে নামবে ও ফুরোবে
এভাবেই রাত নামবে ও ফুরোবে
আর আমি পায়চারি করতে
করতে
করতে
করতেই থাকবো
হয়তো বারান্দা ছেড়ে পথে নেমে যাবো
ফের বারান্দায় ফিরেও আসবো
ফিরে এসে ফের
বারান্দায় পায়চারি করতে থাকবো
শর্করাহীন হয়তো ঘুমোবো খুব ভোরে
আবার সকালে সেই পায়চারি, বারান্দায়
৩
প্রেম
ফুলে ওঠা, ফুঁসে ওঠা সব ওঠা শেষে
সরল সুবোধ ঢেউ তটে এসে মেশে
সকলই থিতায়ে আসে ঘোলা জল যত
থেমে যায় কেঁপে মরা বিহগের মতো
থেমে যায় ঝড় আর বুক ধড়ফড়
তূণে ফিরে ঘুম দ্যায় শিকারির শর
প্রেম ধীরে মুছে যায় যেতে হয় বলে
মুছে গিয়ে বেঁচে যায় প্রেম কৌশলে
৪
ঘর নাই
নদীমন নিয়ে এই গৃহকোণে থাকি
পলাই পলাই মন আটকায়ে রাখি
আমারে কিনেছে ঘর টানে সন্ন্যাস
দুইদিকে টানাটানি প্রাণ হাঁসফাঁস
ঘর নাই তবু তার রয়েছে বাসনা
ফিরায়েছি তবু মনে সংশয়, সোনা
ঘুরেফিরে ফিরে আসো টালুমালু চাও
আকুতি চাবুকে বুকে দাগ কেটে যাও
৫
এই বসন্তে
শিমুল ডানায়
মিশে থাকবে লোহু
দোয়েলের ঠোঁটে
ফুটবে জবাইয়ের পশুর ঘর্ঘর
দখিনা আনবে
ঘাসবন পোড়ার কটূগন্ধ
এই বসন্তে কিছুই হবে না,
যা কিছু হওয়ার
বায়েজিদ বোস্তামী
জন্ম রংপুরে। কবি। গদ্যকার। জীবন ভোগ নয়, উপভোগে আগ্রহী। প্রকাশিত বই ‘পাপের পুরাণ’ (কবিতা, ২০১৯) ই- মেইল bostami81@gmail.com