।। ফরহাদ মজহার ।।
২০০৯ সালে ‘বিডি আর্টস টোয়েন্টি ফোর ডট কম’-এ প্রকাশিত হয়েছিল কবি ফরহাদ মজহারের ‘শিবানি’ সিরিজের তিনটি দীর্ঘ কবিতা: ‘শিবানি বন্দনা-১’, শিবানি বন্দনা-২’ ও ‘যখন চৈত্র সংক্রান্তি’ । পরে ২০১৯ সালে ওই সিরিজের আরও একটি কবিতা রচনা করেন কবি ফরহাদ মজহার। শিরোনাম ‘শিবানি বন্দনা-৩’। ‘শিবানি’ চলমান। কবি সাধারণত একটি বিষয় আশ্রয় করে একট কবিতা গ্রন্থ প্রকাশ করে থাকেন। আমরা এ বছর বিজয়া দশমীর পরে ‘প্রতিপক্ষ’র পক্ষ থেকে বড় বাংলার পাঠকদের কাছে প্রথমে ‘শিবানি বন্দনা-৩’ কবিতাটি প্রকাশ করছি, এই কবিতাটি এখনও অবধি অপ্রকাশিত। এরপর আমরা ‘শিবানি বন্দনা-১’ ও ‘শিবানি বন্দনা-২’ আবার প্রকাশ করছি। বড় বাংলার সাহিত্য পাঠকদের ‘প্রতিপক্ষ’র তরফ থেকে বিজয়ার আন্তরিক শুভেচ্ছা।
– অতনু সিংহ, কার্যনির্বাহী সম্পাদক, ‘প্রতিপক্ষ’।
শিবানি বন্দনা: ৩
দায় কেন আমার একার? আমি সিধা হিমালয়ে যাবো
কাগজ ও পেন্সিলসহ। শৈলশিখরে হিমে বসে থাকা ছাড়া আপাতত
আমার অন্য কোন কাজ নাই। বরফের অগ্নি দিয়ে খৈ ভাজব
শিবানি, তোমার সঙ্গে। আবার তোমার সঙ্গে বীর্যবান ভালবাসা হবে।
কবিতার খাতা ছাড়া আমাদের কিচ্ছু নাই। না রাষ্ট্র না নীতি
কাবিনে লিখিত আছে তুমি শিবকে ডিভোর্স দেবে না। মোহরানা
মিটিয়ে দিয়েছি, মেয়ে। অতএব কোত্থাও কোন দায় আর নাই।
এখন আমার শুধু ল্যাংটা হয়ে আদি ও অনাদি ব্যাপী শূন্যে ঝুলে থাকা!
শুধু শিবানির জন্য। কেবল তোমার জন্য বারবার সমতল ছেড়ে
হিমালয়ে ফিরে আসি। নির্গুণ নিষ্কাম শূন্যে একটি বিন্দুর
সন্ধানে ফিরে যাই। দৈর্ঘ নাই প্রস্থ নাই আপন অবস্থানটুকু নিজে
চিহ্নিত করব বলে কবিতার খাতা হাতে শিব হই। লোকেশান
নির্ধারণ করবার আর অন্য কোন যন্ত্র নাই। গুগল রয়েছে বটে
ডিজিটাল মানচিত্রে নজরবন্দী হয়ে তোমরা খুঁজতে থাকো নিজেদের
আমি সব নজরদারির বাইরে, সকল প্রকার দেশ কাল বায়োমেট্রিক
শনাক্তিকরণের ঝুঁকি ফাঁকি দিয়ে নিজেকেই নিজে নিজে করেছি নির্ণয়
আমি পারি। আমি শিব। অনন্ত বর্ষব্যাপী শিবানির তস্যাতস্য দাস।
অপার বৃহৎ বঙ্গে কেউ নাই, আমি একা। শুধু আমি একমাত্র কবি।
(১৬ জানুয়ারি ২০১৯। শ্যামলী )
শিবানি বন্দনা: ১
যখন কোনো আর্য নাই, অতএব অনার্য নাই। যখন কোনো আর্যের অধীন পরাধীনতা নাই, যখন মানুষ স্বাধীনতা শব্দ শেখে নি, স্বাধীনতার অর্থ জানে না, কারণ নিজের অধীন হয়ে থাকার কোনো অর্থ হয় না। যখন দেয়াল ছিল না, দেয়ালের লিখন ছিল না, যখন তুলি, তালপাতা, কালি কলম, বেদ, শাস্ত্র, ধর্মগ্রন্থ বিজ্ঞান বিদ্যা কিছুই ছিল না। যখন টেলিভিশান নাই কম্পিউটার নাই, বিজ্ঞাপন বিল বোর্ড কিছুই নাই—ইতিহাসের আগে বৃহৎ বাংলা যখন মেনকার কামে গিরিরাজের ঔরসে কেবলি খোয়াবে ও ঘামে হয়ে উঠছিল, শিবানি, আমি সেই অবিস্মরণীয় স্বপ্নের বন্দনা করি।
যখন কোথাও কোনো ভেদ নাই ভেদবুদ্ধি নাই কোথাও কোন দাগ চিহ্ন পার্থক্যরেখা নাই, জাত পাতের ভেদ নাই স্তর নাই শ্রেণী নাই, কিন্তু ভৃঙ্গরূপে জগতে আছেন শুধু অনাদির আদি সেই অদ্বিতীয় ‘পুরুষ’—আর ছেলেমেয়ে নির্বিশেষে সকলেই যাঁর দাসী—সেই দাসসমাজে কেউ কোথাও আর্যেতর জ্ঞানে অপরকে ‘অনার্য’ বলে ডাকবার দুঃসাহস করে নি, শিবানি, আমি সেই অবিভাজ্য বর্তমানের বন্দনা করি।
ঠিক। আমি মাথা তুলেছি হিমালয়ে, পলিতে কাদায় তোমার লজ্জা হয়ে ছড়িয়ে গিয়েছি সমতলে, কিন্তু বঙ্গোপসাগরে আমিই সেই নুনের ভাণ্ড—ধরে রেখেছি পদ্মা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র; ইড়া, পিঙ্গলা ও সুষুম্না হয়ে যে কুলকুণ্ডলিনী ধারা তোমার ভূগোলে মিলিত হয়েছে, শিবানি, আমি সেই ত্রিবেণীর বন্দনা করি।
যখন দেশ নাই কাল নাই পাত্র নাই, দৈর্ঘ্য বা প্রস্থ কিছুই নাই, যখন পরিমাণ বা গুণ সকলি অবিকশিত, নিঃশব্দে সেই অপূর্ব বিন্দুর মধ্যে শব্দ হয়ে ছিলাম আমি শিবানি—আমিই সেই শুক্রবীজ, দেকার্তের বাবা, জ্যামিতির আদি: —কারণ-পদার্থ সেই বিন্দুর আমি বন্দনা করি।
যখন আমি বনবাসী, বনের মধ্যে বাঘ, ভল্লুক আর সিংহের বৃত্তের মধ্যে তৃণভোজী বুনো মোষ, হরিণ কিম্বা হনুমান, যখন খাদ্য ও খাদকের মধ্যে আমার বয়স বাড়ছে, কাটছে আমার দিন, যখন আমি সংগ্রহ করছি সবুজ ও মধুর চাক আর পরস্পরের শরীরে আমরা চাষ করে চলেছি বিশ্বনিখিল; কিম্বা যখন আমি সবে মাত্র শবর কিম্বা ব্যাধ, কাঁধে আমার ধনুক আর তীর—কুড়িয়ে শিকার করে খেয়ে দেয়ে কাটছে প্রকৃতির অক্ষরেখায় প্রাকৃতিক আমার দিন: যখন হয়ে উঠছিলাম কাঠের লাঙল, বোকা বদল আর কৃষকের হুট হাট, তারও আগে তারও বহু কোটি আলোকবর্ষ আগে আমি ছিলাম বাতাসের খুশি, নক্ষত্রের গতি আর বৃক্ষের ফটোসিনথেসিস। সূর্যের আগুন ধারণ করে যিনি সবুজ কিম্বা প্রকৃতি, শিবানি, আমি সেই আলোক সংশ্লেষণের বন্দনা করি।
নাকি ছিলাম মঙ্গলগ্রহে? ছিলাম নাকি ইউরেনাসে কিম্বা প্লুটোয়? কিম্বা ছিলাম বৃহস্পতির বাষ্প, কিম্বা কোথাও বুঝি ঘটেছিল আমাদের এনকাউন্টার অব দ্য থার্ড কাইন্ড—যখন ভেতর ও বাহির উভয় চোখে প্রথম আমাদের চোখ চাওয়া চাওয়ি হয়, সেই আমাদের প্রথম এবং শেষ দেখা, শিবানি, আমি সেই অপলক মুহূর্তের বন্দনা করি।
এরপর এল দেবতাদের যুগ, আর আমরা সকলেই দেবতাদের চোখে অসুর হয়ে উঠলাম। যখন দেবতা ও অসুরের মধ্যে মরণপণ যুদ্ধ হয় আর অসুরদের পরাজিত ও হত্যা করবার জন্য যখন দেবতারা আমাদের ‘জঙ্গি’ বলে চিহ্নিত করতে শুরু করে, শিবানি, আমি সেই ওয়ার এগেইনস্ট টেররের ভেতর থেকে পয়দা হয়ে এসেছি। আমি সেই অসুর। আমিই সেই জঙ্গি। সকল প্রকার বেদ, শাস্ত্র, আইন ও রাষ্ট্রের বাইরে যে গুয়ান্তানামো তার ঘুলঘুলির মধ্যে বসে আছি আমি বাংলাদেশের চড়ুই—সন্ত্রাস কিম্বা শান্তি, রাষ্ট্র কিম্বা নৈরাজ্যের ভেতর ও বাহির উভয় দিকই আমি উল্টেপাল্টে দেখেছি। কসম শিবানি, সকল প্রকার দেবতার বেদ, শাস্ত্র, ধর্মতত্ত্ব ও টেকনলজির জগৎ ধ্বংস করবার জন্যই আমার জন্ম, আর তুমিই সেই কসম—আমি সেই কসমের বন্দনা করি।
হাঃ হাঃ হাঃ মৃত্যু ভয়ে ভীত দেবতারা অমৃত চেয়েছিল, শিবানি, অথচ তারা নাকি ‘দেবতা’, কিন্তু তারা অমর হতে চায়। যখন সমুদ্রমন্থনে উঠে এল বিষ, ঐ কাগুজে দেবতারা প্রাণভয়ে পালাল, আর তখনই বিষ ও অমৃতের মাঝখানে ঠিকই এসে দাঁড়ালেন তোমার শিব, জগদীশ্বর মহাদেব। জগৎকে বিষ ও বিষপতনের প্রলয় ও ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করবার জন্য অমৃত জ্ঞানে তিনি পান করলেন সেই গরল। দৃশ্য ও অদৃশ্য সকল প্রাণ ও অপ্রাণীবাচক সৃষ্টি ঊভয় রক্ষার সেই অপূর্ব বিষপানের মুহূর্ত, শিবানি, আমি সেই অমর দৃশ্যের বন্দনা করি।
বিষের জ্বালায় শিব নীলকণ্ঠ, দিশেহারা, তখন নিজের হিমঠাণ্ডা শরীর দিয়ে যে সরিসৃপ তাঁর গলা লতিয়ে ধরে রেখে সেই জ্বালা উপশম করেন, আমি সেই নাগেশ্বরের ফণার দিকে নিষ্পলক তাকিয়ে আছি কোটি বছর, মোহাবিষ্ট। নীলকণ্ঠের গলায় যিনি মালা, শিবানি, আমি সেই শীতলতনু বিষধরের বন্দনা করি।
যখন মিছিল ও মিটিং, বিপ্লব ও রক্তপাত, যখন সকলে ‘মুক্তি’ দাবি করে শিবানি সেখানে আমি দাবি করি দাসত্ব। আমার ব্যানার আমি ঝুলিয়ে দিয়েছি সর্বত্র, আমি মুক্ত, অতএব স্বেচ্ছায় অপরের দাস হতে আমার বাধা কই? মনের মানুষ মনে রেখে অপরের দায় উসুল করতে গিয়ে আমি ভিখারি। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ শ্রীমতি রাধিকার যে দাসত্ব করে গিয়েছেন, শিবানি, বঙ্গে আমি সেই দাসত্ব আস্বাদনের ফকির, আমি সেই দাসত্বের বন্দনা করি।
কে জানত যে মানুষ একদিন নিজেরই পাপে ‘স্বাধীনতা’ নামটি আবিষ্কার করবে, কিন্তু করবে পরাধীনতার বিপরীতে। কে তাদের বলবে নিজেরা পরাধীন হবার পর, পরাধীনতা-হীনতার যে আকাক্সক্ষা তার মধ্যে স্বাধীনতার সংকল্প নাই, স্বাদ নাই। এই সেই ঐতিহাসিক মানুষ যারা স্বাধীনতাকে পরাধীনতার বিপরীত শব্দ ছাড়া বুঝতে অক্ষম। কে জানত যে প্রাকৃতিকতার গর্ভ থেকে চ্যুত বিচ্ছিন্ন হয়ে মানুষকে ‘মুক্তি’ ‘মুক্তি’ বলে চিৎকার করতে হবে। যখন মুক্ত ছিল বলে ‘মুক্তি’ শব্দের অর্থ জানত না কোনো মানুষ, ‘শিবানি’, আমি সেই অনৈতিহাসিক অজ্ঞান আনন্দের বন্দনা করি।
আজ ১৪১৫ চৈত্র সংক্রান্তির দিনে জানি না কেন ‘শিবানি’-ই আমার নামমন্ত্র হয়ে উঠছে, হয়ে উঠছে আমার নামাশ্রয়। জানি যে আমি ডানে যাচ্ছি না, বামেও না, উর্ধ্বে নয়, অধোও নয়। যেখানে যাচ্ছি সেখানে আগে কি কারো পা পড়ে ছিল? পড়ে আছে কি কারো পায়ের ছাপ, কোনো চিহ্ন বা দাগ? যাচ্ছি পিছলে, হামাগুড়ি দিয়ে, ডিগবাজি খেয়ে, যেন কেউ আমার পিছু নিতে না পারে। যারা আমাকে অনুসরণ করবে তারা যেন পথের ভয়ে আমাকে ত্যাগ করে, পথের তকলিফ মেপে নিয়ে ফিরে যায় যার যার গোপন গর্তে। যাচ্ছি কারণ এই সেই যাত্রা যা কবি মাত্রেরই একান্ত নিজের। মৃত্যুর মতো ভারি অথচ মধুর এই গমন। যারপরনাই নিঃসঙ্গ অথচ প্রেমে আনন্দিত। আমি যাচ্ছি, শিবানি, আমার চোখে জল, কিন্তু আমি নির্ভয়—আমি সেই অচিহ্নিত গন্তব্যের বন্দনা করি।
বাংলাদেশ নিজেকে নিজে ধ্বংস করবার আগে আমাকে শোনাতে হবে সেই গান যা ছিল অনার্য দেবতা শিবের অপূর্ব ধর্মসঙ্গীত। এই সেই শিব যার কোনো ধর্ম ছিল না, স্যেকুলারিজম ছিল না, ছিল না ফ্যাসিজম, গণতন্ত্র কিম্বা সমাজতন্ত্র; এমনকি শিব শ্মশানবাসী হয়েও কমিউনিজমের অর্থ জানত না, জ্যান্তে-মরা হয়েও মহাদেব সাধুর মতো সাদা পোশাক পরল না শিবানি, বরং গায়ে মাখল ছাই, আর হয়ে রইল দিগম্বর—বৈদিক পুরোহিতগণ তার হাতে ত্রিশূল আর পরনে বাঘছাল তুলে দেবার আগের যে দিকবসন মুহূর্ত, সেই আপাদমস্তক নগ্নতার আমি বন্দনা করি।
আমি শিশুর মতো ন্যাংটা হয়ে তোমার কাছেই ফিরে এসেছি আবার, শিবানি, কী আছে আমার কাব্য ছাড়া! আছে দুই একটি চিহ্নসর্বস্ব শব্দ ও অক্ষর যাদের ভাঁজের মধ্যে আমি বামন হয়ে চাঁদ ধরার সাধ করি, ধরে ফেলতে চাই তোমাকে। তোমার নাম ও অস্পষ্ট সব গল্প শুনে পথে বেরিয়ে পড়েছি আবার। গল্পের ভেতর গল্প হয়ে হেঁটে যাচ্ছি, চলে যাচ্ছি পুরাণ থেকে পুরাণে। আমাকে সংগ্রহ করতে হবে সেই সব রক্ত, হাড় ও করোটির অবশিষ্ট যাতে বাংলাদেশ শতখণ্ডে বিভক্ত হবার আগে তাদের জড়ো করে বানাতে পারি তোমাকে, সবাইকে দেখাতে পারি তোমার ছবি, শোনাতে পারি অখণ্ড এক নিখিলের কেচ্ছা একমাত্র কবির পক্ষেই যা সম্ভব। তারপর তোমার পদারবিন্দে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ব আমি, ক্লান্ত পরিশ্রান্ত শিব, একালে যাকে তুমি ‘কবি’ বলে ডাক। ধর্ম, পুরাণ ও ইতিহাস অতিক্রম করে আমাকে ফিরতে হচ্ছে বর্তমানে, যে প্রেমে কাব্যকে সম্মুখ সমরে ধাবিত করো তুমি শিবানি, আমি সেই দিব্যজ্ঞানের বন্দনা করি।
(৫ মে ২০০৯। শ্যামলী)
শিবানি বন্দনা: ২
এক
হাজার বছর নামাজ পূজায়
পেয়েছি ধন শিবের কৃপায়
সাক্ষী জগৎ চাঁদ সেতারা
বৃক্ষ পক্ষী ফেরেশতারা।
সরিসৃপ ও জীব-জানোয়ার
সদাই ডাকে সাক্ষ্যে তোমার
তোমার সাক্ষ্যে মেঘ ও বৃষ্টি
ঋতুর চক্রে প্রাণ ও সৃষ্টি।
বঙ্গে জেনো রাষ্ট্র আছে
শিবত রয় পার্বতীর কাছে
সাধু বাক্য ধার্য জানি
তুমিই সত্য ওঁ শিবানি ॥
দুই
গৌরি, বঙ্গে নদ ও নদী
বইছে বইবে নিরবধি
তোমার পায়ের ধুলার আদর
ধুয়ে দিচ্ছে বঙ্গোপসাগর
শঙ্খে ফেনায় সাগরবেলা
ফর্শা রৌদ্রে করছে খেলা
পিঠ দেখিয়ে তিমির মেয়ে
সালাম দিচ্ছে তোমায় পেয়ে।
তুমিই নুন আর তুমিই ফেনা
মহেশ্বর তাই তোমার কেনা।
সাধু বাক্য ধার্য জানি
তুমিই সত্য ওঁ শিবানি ॥
তিন
তুমিই বাক্য তুমিই চিহ্ন
চিহ্ন নাই তো সবই শূন্য
তুমিই রস আর তুমিই তত্ত্ব
তুমিই গুরু তুমিই ভক্ত।
আমি ফকির জ্যান্তে মরা
গোরস্তানেই ঘোরা ফেরা
শ্মশানে যাই তোমার বশ্য
মাখি মৃতের চিতাভস্ম।
ধার নিয়ে আজ তোমার বাণী
লিখতে আছি কাব্যখানি
পার্বতীর হুকুমের গোলাম
নিও সকল কবির সালাম
বঙ্গে সতির হুকুম ছাড়া
চলে না শিব কারো দ্বারা
তুমিই সত্য ওঁ শিবানি
তুমি বৈ আর আন্ না জানি ॥
(৫ মে ২০০৯। শ্যামলী)