।। আহসান উল্লাহ্ ।।
বারেক তুফান
তবে নদী ও নৌকার জলসঙ্গমে মাঝি
একাই একইসাথে দুইদিকের বিপদ আঁচ কইরা
তারপর নৌকায় দেখলো একটা ছোট্ট নদী আছে
ঐটা যদি বড়টারে নাগাল পায়
কিংবা সেই সংশয় ঘিরা
ধরলো আধেক অন্ধকার আধেক যমুনার পাড়।
তখন আরেক বিকেল রাতের দিকে যাইতে গিয়া
থাইমা থাকে চায়া থাকে আড়ালে ডাকে অশনিরে
ফুইলা ফাইপা যৌবনের বাহার দেখায় মাঝিরে
এবং যা আগামী পৃথিবীর সম্পদ তা আত্মগত কইরা লয়।
এদিকে মাঝি ও আকাশ
পরস্পরের দিকে অলৌকিক উপহাস
ত্যাগ কইরা নৌকা ও নদীর সমতলে জলে
একই বৃত্তের অধীনে উপভোগ করে প্রকৃতির
অশ্লীল বীর্যপাত !
সন্ধ্যাগুলি
ঘুম থাকি উঠি যেইহানে আমি কামে যাই –
সেখান থাইকা শীতলক্ষ্যা মেলা দূর।
আমার পাতলা গেঞ্জি বাইয়া শীতলক্ষ্যার বাতাস বয়
কেমনে যে এই আলিঙ্গন আমি টের পাই
কইতে পারুম না
বিনুনির লগে আমার সংসার আছিল।
অফিসের ধুমসি ধুমসি মাইয়াগুলান
নাক উঁচাইয়া হাঁটে
আমারে ইশারা দেয়
শীতলক্ষ্যার ভরা উজানে নাও ভাসাইবার লাগি।
আমি বিকাল হইলে নামায পড়তাম যাই –
আমার মাথার মইদ্যে কামের শয়তান কিলবিল করে
দুপুরের পরে ক্যান্টিনে আমারে ডাইকা নিয়া
দাঁত দেখাইন্যা ম্যাডামগুলা আমার মগজ চাবাইতে লয়।
আমি আস্তে আস্তে শীতলক্ষ্যার দিকে হাঁটতে ধরি –
গাঙ্গের ভরা যৌবনের গন্ধ আমারে মাতাল করতে থাকে
আমি মনে মনে নিস্তেজ হইয়া পড়ি
হুড়মুড় কইরা বৃষ্টি নামে আমার টিনের ছাপড়ার ঘরে।
রেইন এ গেইন
ব্যস্ত শহর- জানজট- খুব ব্যস্ত
তাহাদের একটুও ভেজবার ফুরসৎ নাই
কালো গ্লাস, হাইহিল, প্রিটি আমব্রেলা
গা বাঁচিয়ে চড়তে থাকা চলুই
সব ইতস্তত চায়ের কাপে উম কেড়ে নিচ্ছে
আর আমি
হেঁটে যাচ্ছি সোজা উত্তরের রেডলাইটের দিকে
আকাশ থেকে ফোটা ফোটা
পুরীষের গন্ধ নাইমা আসে
এই আবর্জনা- ডাস্টবিন ভাইসা
আমার দরজায় জমতে থাকে পলিথিন,
ইউজড কনডম,
ইঁটভাঙ্গা শেফালীর বগলের ঘাম,
ভেজা ন্যাতানো ব্লাউজ
সিড়ির পাশটা আমি সাঁতরায়া পার হই
নিচতলায় তাসের আড্ডা, মরা ইঁদুর
রোকনের বাচ্চাগুলা পানি লইয়া ছানাছানি করে
অন্ধকার আসমান থাইকা
ইশ্রাফিল আরও জোরে থুতু ছিটায়!
প্রচ্ছদের ছবি: শংকর কর্মকার
আহসান উল্লাহ্
বাংলাদেশের তরুণ কবি। বাড়ি কুমিল্লা জেলায়। পড়াশুনা: মেকানিকাল ইন্জিনিয়ারিং-এ। চাকুরিজীবী।