।। অরূপরতন ঘোষ।।
প্রজাতান্ত্রিক কবিতা-১২। নববর্ষ
কবিতা লেখার মতোই এক আতিথ্যময় সকাল এসেছে আজ…
আসবাবপত্র চকচক করছে
আঁটিবাঁধা সহজ শাক, ডাল সিদ্ধ হওয়ার
শব্দও আসছে—
জানলার পাশ দিয়ে জানুয়ারির প্রথম মৃতদেহ যায়
দেখি সবুজ কুয়াশায় লাফিয়ে উঠছে জিরাফ
মৃতের শরীরে;
তোমার গভীর হাত আমাকে স্পর্শ করে
আমি তো চেয়েছি ওইখানে মাত্র দু’খানি কবিতা
লোকচক্ষুর আড়ালে গুঁজে দিতে
এই রক্তাক্ত নতুন বছরে
সেলাই যন্ত্রে প্লুত হতে হতে
প্রজাতান্ত্রিক কবিতা-১৩। প্রকল্প
পুনর্বার নম্রতা শিখি জলজ শব্দের কাছ থেকে
যাদের দূরত্বে রেখে তুমি একবার, দুইবার
আশেপাশে যাও আর ফিরে আসো
চমৎকার ডুবে যাওয়ার মতো
শীতের দুপুরে…
খুলে দাও কলমীলতার গিঁট, রোদে রাখো
আগামী কয়েকমাসে শুকিয়ে আসবে তারা
হবে বিবর্ণ, কথাহীন
দাশগুপ্ত বাড়ির মেজো মেয়েটির মতো
ততদিন সাক্ষরতা নিয়ে ভাবা ভালো
এমনকী পৌরসভার চেহারা আগামীতে
কী হতে চলেছে এবাবদও দু’একটি
মিটিং করে নেওয়া যেতে পারে ইত্যবসরে!
প্রজাতান্ত্রিক কবিতা-১৮। ফরেস্ট বাংলো
কাচের গঠন দেখে আশ্চর্য হই
সেরামিক নীলের আবগে দেখেছি আগেও, তবু
এক সাংকেতিক রঙ
যুদ্ধকালীন বেতারতরঙ্গ যেন জ্বলে ওঠে
সতর্ক সন্ধেবেলায়
ঠিক বোঝা যায় না
হরিণ পালিয়েছে জিপ থেকে, নাকি
কেউ তির ছুঁড়ে হত্যা করেছে নীলগাই—
এসব প্রশ্নে রেঞ্জারসাহেব বিব্রত হন
আমিও সুযোগ বুঝে এগিয়ে দিই পানীয়ের গ্লাস
নিঃশর্ত জ্যোৎস্নার দিকে
ছবি: Abstract 01 (2010) by German painter Christian Hetzel (b.1965). via Minimal Exposition.
অরূপরতন ঘোষ
৯০ দশকের শেষের দিক থেকে শুরু করে শূন্য দশকের কবি, পশ্চিমবঙ্গের। এছাড়াও ছোটগল্প লেখেন। লিখেছেন উপন্যাসও। অনুবাদ করেছেন চলচ্চিত্রী লুইস বুনুয়েলের আত্মজীবনী ‘শেষ দীর্ঘশ্বাস’, পল গগ্যাঁর তাহিতি জার্নাল ‘নোয়া নোয়া’। কবিতা, গল্প-উপন্যাস লেখা এবং অনুবাদের পাশাপাশি স্বাধীন স্বল্পদৈর্ঘ্যের বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন অরূপরতন। অভিনয়ও করেছেন কয়েকটি ছবিতে।
খুব সুন্দর।