আজ রবিবার, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

অন্ধকার যেসব রঙ চেনে

।। মোনালী রায় ।।

মরেছ যত, তত পারফিউম। ঝাঁঝালো গন্ধ রাজকীয় উড়ে যায়
দাঁড়িয়ে থাকার অভ্যেস নেই মেয়েদের লাইনে। সরকারি জলসত্রে, চিরটা কাল। 
যখন বাঘের জিভ খাদানে নুন খোঁজে
তখন নিজের জল নিজে খুঁড়ে খাই
সাথে নাম ঠিকানাহীন একটা কবর, খালি রেখে আসি

স্থিতি

সব চিনে ফেলার অনেক আগে, যখন মাংসের টুকরোগুলো বেরোতে চাইছিল,
তখনই অন্ধকার পা ফেলে ফেলে মার্ক করে রেখেছে গুমঘর!  
রংধনুতে রাখা শরীর ঘর মাটি ও মিল্কিওয়ে।

পুরুষ্টু  আতর অগরু গুলকন্দ চন্দন জড়িয়ে যায়  ততদূর…
যতদূর সিঁড়ির পর সিঁড়ি গিয়েছে মু
ক্তিকামী আত্মাদের কিচেন লাইব্রেরী কফি আর মদের টেবিল খালি করে।  

যে কেউ যেকোনোভাবে ইনভিজিবল হতে পারে। 
যান্ত্রিক ফসিল বা যন্ত্রণা না হয়ে।

তাপমান নামতে পারে অতিধীর, বৈকল্যবিহীন চেতনার ভেতর
যেন চামড়া ছাড়িয়ে বের করে আনা
স্থির মাংসখন্ডগুলো ক্লিপ করে ঝোলানো থাকবে অনন্তকাল, ফ্রেশ! 

ধূলো নয়, বৃষ্টিবাদলা রোদ ব্যাকটেরিয়া নয়

 জাস্ট ম্যাজিক

বাঘ

বাঘটাকে প্রথম দেখা গেছিল কালো রঙে, ভারী ডোরার ডবল ভারে চিড়েচ্যাপটা
বাঘ বাঘ কিন্তু বন্দী বন্দী 
আর খেলা খেলায় আট মানুষ প্রমাণ বেড়ে গিয়ে সেলুলয়েড সমুদ্রে
সমুদ্রের একটানা নুন বাঘকেও কাবু করে 
সমবেত তারা- অন্তরীক্ষ ও পাতাল নির্জন হলে
চাকচিক্যের হাজার ভ্যারাইটিতে এক সিগন্যাল পাঠায়। একার।
সাদা, কালো, পাংশুটে, হলুদ বিচার করে না! 
সাব-টাইটেলে শ্রান্ত, ক্লান্ত, অবসন্ন একলা বাঘের ক্ষীণ বনবাস নিশ্চিত করে, 
ঘুমোতে গেছিল মেক আপ আর্টিস্ট ও ডিরেক্টর
তারপর
চোখে চোখ
নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাস
দুই কাঁধে দুই থাবা
দুই পায়ে ওজন- শরীর- ভার
মূহুর্ত, গতজন্ম, অপেক্ষা, প্রাচীর

সিল্যুয়েট

শহরটা থেকে সরে যাচ্ছি খুব দ্রুত
কিছু শব্দ, গন্ধ স্বাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে দিতে চাইলেও চারিয়ে যাচ্ছে শরীরে
শেকড় বা আত্মা বা অভ্যেস বা স্মৃতি….  শক্তিশালী!!
নাভি ফেলে এসেছি ….
শয়তানের মোকাবিলা করতে করতে নরখাদক ক্রমশ!  
দুটো ভাঙা শিং হাত ব্যাগে
রাজ্যের বিল, কার্ড,  র‍্যাপার, পেন, ঝুমকোর মাঝে রক্তমাখামাখি
কু ডাকছে, অন্তর
জানি, যতই লুকোই, শয়তান মাথা নেড়ে নিজের জানান দেবে আবার

মরণ

মোহজাল মাচা- টোপ-মোটর রেসের খেলা অন্তত, পেয়ে গেছি নতুন, উত্তেজক।
অভিযোগ নখদাগ 
কালশিটে ঘাস-মরচের 

অহরহ লাবডুব’-এ, নাকি শিউরে খয়েরী হয়ে ওঠে,  ইহলোক।

রাজপাট ছেড়ে নেমেছে জঙ্গল। 
পদ্ম-গোখরো কানায় কানায় বিষ গিলেছে অন্ধ মুনিষ, 
তার জয় হোক। 

মরেছ যত, তত পারফিউম। ঝাঁঝালো গন্ধ রাজকীয় উড়ে যায়
দাঁড়িয়ে থাকার অভ্যেস নেই মেয়েদের লাইনে। সরকারি জলসত্রে, চিরটা কাল। 
যখন বাঘের জিভ খাদানে নুন খোঁজে
তখন নিজের জল নিজে খুঁড়ে খাই
সাথে নাম ঠিকানাহীন একটা কবর, খালি রেখে আসি

স্বস্তি

অবশেষে সাদা ঘোড়া এলো
বসত হলো, তিন সীমানার বাইরে
সবিনয় জানান দিল, লক্ষণরেখারা 
মোহনা যত গল্পেরই হোক, পাহাড় ধ্বসে
ধারাজল, কাটাকুটিঘর উপচানো রঙের তালাশে নিজেকে হারায় 
অতএব নদীসকল খেই হারা
…সব পুরনো ঘায়ের দাবি নাকচ করে দিয়েছে সবুজের
একশ বাহার 
কংক্রিটের রাস্তা ঘুরে ফিরে গিলে নিতে শিখেছে মায়াজাল ও নক্ষত্র আস্ফালন 
বয়স থেকে খসে যাচ্ছে জোনাকিরা। 
ঘড়িবন্ধ বেলার থেকে ফিরে যাচ্ছে মেঘ- আষাঢ় ঝঞ্ঝার দাবি 
যেকোনো ভাবেই হোক অতিধীর হয়ে উঠছে ইচ্ছেমুখ
যেন অনেকখানি সর জমতে পারে এইবারই। প্রথম

ছবি- মোনালী রায়

মোনালী রায়

চিত্রকর। কবিতাও লেখেন। বাঙলা অপর সাহিত্যের মানুষ। বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলায়, পেশা সূত্রে বাস করেন নয়া দিল্লিতে। ‘দিল্লি হাটার্স’ ও ‘দেহলিজ’ পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত। ‘প্রতিপক্ষ’ বর্ষপূর্তি-২০২১ সংখ্যায় প্রচ্ছদ বিভাগের দায়িত্ব সামলেছেন।

Share

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top