।। শ্রেয়ণ।।
কোথায় একটু পরিষ্কার ভাত
খোলা পড়ে আছে
ডানার তলায় লুকিয়ে
পাখি তুই নিয়ে আয়
দুজনে মিলে খাবো
ফার্ম হাউজ
সিরাজগঞ্জে আমাদের পারিবারিক ফার্ম হাউজ রয়েছে আগুইরা গ্রামে। সদর দরজায় পাহারা দেয় রামকাঁকড়া। তেইশ পুরুষ ধরে বিশ্বস্ত। বাগানে কঙ্কালেরা গিটার বাজিয়ে গান করে। ওদের জন্য বিশেষ মদ আনানো হয় মিশর থেকে।
ছুটি কাটাতে আমিও গ্রামে যাই মাঝে মাঝে। চামড়া-রক্ত-মাংস সব উঠোনের হুকে টাঙিয়ে রেখে বাগানে ঢুকতে হয়। এরকমই নিয়ম। বিদেশ থেকে অতিথিরা এলেও মেনে চলেন।
পেছনের চোরা কুঠুরিতে আগে মেঘপরিদের বন্দি করে রাখা হত। এখন আর হয় না। দিনকাল বদলেছে।
বাবা ইয়াগা
নদীর পাশে বাবা ইয়াগার বাস—
ঘন জঙ্গল আর নেই এখন,
মুরগির পা-ওয়ালা বাড়িটাও
কবে ভেঙে গিয়েছে।
ভাটায় জল কমে, বালিকাদায় দেখা যায়
অনেক নরকঙ্কালের স্তূপ।
পাথর কেটে বুড়ি ওসব তৈরি করে,
নদীতে ফেলে দেয়।
কবে সে মরে যাবে,
তার কুমড়ো-বাড়িতে হবে ট্যুরিস্ট স্পট;
সরকার তক্কে তক্কে আছে।
চোর পাখি
ফুল ছিঁড়ে নিয়ে গেল
ভিখিরি ছেলেটা
তাকে সাত দিন ধরে
ফুঁ দিয়ে পাখি বানাবে
উড়িয়ে দেবে রাতের আকাশে
কোথায় একটু পরিষ্কার ভাত
খোলা পড়ে আছে
ডানার তলায় লুকিয়ে
পাখি তুই নিয়ে আয়
দুজনে মিলে খাব
সোনালি কুয়াশা
শব্দ অনেক বেড়ে যায়
যদি সোনালি কুয়াশা জমে
কোনো এক গ্রহান্তর থেকে
এসেছিল চকচকে জীবাণু
আজও তারা তীক্ষ্ণ শব্দ
পেলে জড়ো হয়
খেয়ে খেয়ে বাড়ায়
নিজেরাও বাড়ে
সোনালি কুয়াশা মারার
কোনো রকম প্রতিষেধক
বিজ্ঞানীরা খুঁজে পাননি
জেন
শিঞ্জিনী বললো, “আমি বুঝেছি নৈঃশব্দ্য কাকে বলে। বাতাস কোন দিকে যায়, মনের উল্টো দিকে! এটাই জেন।”
আমি দস্তুরমতো তর্ক জুড়লাম, “তন্ত্রের মধ্যেও জেন আছে, কালী স্বয়ং শূন্যতা। সব রকম বাইনারির ঊর্দ্ধে। এজন্যই তন্ত্র এত রঙিন।”
শিঞ্জিনী অবাক হয়ে ভাবতে শুরু করল।
উৎসাহ পেয়ে আমি মহানন্দে আবার বকবক করছি, “গোটা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের রহস্য লুকিয়ে আছে এই দেহে। তাকে জানতে হবে। এই রিয়েলিটি কখনই শেষ কথা হতে পারে না।”
শাক্যমুনি বুদ্ধ হঠাৎ খেঁকিয়ে উঠলেন, “মাদারের বাচ্চা। ঘুমোতে দিবি? নাকি পাছায় ঝেড়ে একখান…”
শ্রেয়ণ
জন্ম- ১৯৯১। নিবাস- নিমতা, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা, পশ্চিমবঙ্গ। পেশা- সাংবাদিকতা।
চমৎকার লাগল শ্রেয়নের কবিতা।