।। নাদিয়া জান্নাত ।।
চতুর্দিকে ধাঁধা। পথ ভুল করে
অন্য পথে যাই।
ভ্রমণে সামলে নেই জামা।
চারদিকে খুব তাড়াহুড়ো
তেষ্টা পেলে মনে হয়
তুমি রংপুরে আছো যেন
তেষ্টা পেলে মনে হয় তুমি রংপুরে আছো যেন
ঘোর
কবিতা পড়লে জ্বর সারে।
জ্বরের তীব্রতা নিয়ে
প্রেমের কবিতা পড়ি আজ-
আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন কবি!
লাইট! ক্যামেরা! এতো এতো নীল
মুখ!
পিপাসা পেলেও কোনো আলো জ্বালছি না
বৃত্ত। ঘুরপাক। অন্ধকার লোকেশন।
মাথার ভেতর ঢুলে ঢুলে মন্দিরা
বাজাচ্ছে অচিন এক পেঁচা।
সোঁদা ঘ্রাণে ঘর ভরে গেলে,
আপনি কি কপালের পাশে হাত
রাখবেন প্লিজ!
কাঁপন
কথা হলো!
অথচ আওয়াজ শুনলো না
কেউ কারো আর-
কথা হলো! হাহাকারে কেউ কা’রো
মুখচ্ছবি দেখলো না যেন!
ধাক্কা দিলো। তবু
বুক পাটাতনে
এতটুকু চিহ্ন থাকলো না
টনটন
করে উঠলো
হৃদয় উপচানো অংশটুকু
মনে হলো
তবলার লহরা বাজিয়ে হেঁটে
গেলো যেন কেউ,
যার দিকচিহ্নহীন চাহনিতে
পুরাতন গভীরতা নেই
প্রেমে-কামে, একাকীত্বে থরথর করে
কাঁপলে, ফ্যান্টাসি থেকে দূরে
যার মুখ তার কথা একদিন
মনে পড়েছিলো
বেনামি মাস্তুল
চালতা গাছের ছায়া, ঝিরিঝিরি
বাতাসের পর
শীত নেমে এসেছে পাহাড়ে।
আসমানি দেহে পুড়ে গেছে
বিবাহের সরু মেঠো পথ।
সনাতন হিম পায়ে ঠেলে
গুটিসুটি হয়ে থাকা মেঘ
তুমি চিতাবাঘ হয়ে যাও,
খেলাঘরে জমা রাখো
কাগজের ফুল-
যদি তার সন্মুখে দাঁড়াও
তবে কামজ্বরে নুয়ে যাবে
জাহাজের বেনামি মাস্তুল।
পিপাসা
তুমি আজ শাদা জামা পরেছ কি এই
বুধবারে…
হেমন্তের শুদ্ধতায় বেদনারা যেন ভরে আছে
এতো কামিনীর গন্ধ! এতো প্রেম!
প্রাণপণ অন্ধকারে ডুবে আছে মায়া!
চতুর্দিকে ধাঁধা। পথ ভুল করে
অন্য পথে যাই।
ভ্রমণে সামলে নেই জামা।
চারদিকে খুব তাড়াহুড়ো
তেষ্টা পেলে মনে হয়
তুমি রংপুরে আছো যেন-
ক্ষোভ
হেঁটে হেঁটে বাজ পাখি এলো
যেন পাখি পায় নাই নির্বোধ শিকার;
যেন আজ পায় নাই জীবজন্তু,
জ্যান্ত কোনো মাছ।
রাতপেঁচা, খরগোশ অথবা ইঁদুর।
যেন কালো শার্ট গায়ে দিয়ে
উড়ে এলো দূর ইনসমনিয়া থেকে-
যেনবা বাঁকানো ঠোঁট মজবুত তার
সিগারেট খেয়ে পুঁড়ে গেছে।
ঘৃণাভরা ক্ষিপ্রতায়, তাকিয়ে রয়েছে
আমার অথবা আর কোন ভুল দিকে
নাদিয়া জান্নাত
বাংলাদেশের তরুণ কবিদের মধ্যে অন্যতম। রংপুরের মেয়ে। ইতোমধ্যে তিনটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। সেগুলি হলো যথাক্রমে, ‘বুনোফুল ও ‘ছবিওয়ালার গল্প’, ‘শালুক ফুলের যাতনা’ এবং ‘ইতি তোমার লাবণ্য’।