আজ বৃহস্পতিবার, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

মফঃস্বলে ঘোড়াগুলো ও অন্যান্য কবিতা

।। অদ্বিত অদ্রি অনন্ত ।।

“আমাদের ঘোড়াগুলো—
আস্তাবল ভেঙে তারা দৌড়েছে, বহুদিন পর—
নদীবরাবর। আমরা তাদের পিছু নেই নি কেউ, কেননা
সেখানে রয়েছে মেঘ, অসামান্য বৃষ্টিজল।
আমরা তো জানি, নদীতীরবর্তী যেকোনো প্রাণই ধরাছোঁয়ার বাইরে।
আমাদের ঘোড়াগুলো কবিতা লেখে, থাকে মফস্বল…”

নিজেকে ফিরে দেখব বলে

নিজেকে ফিরে দেখব বলে ঘুরিয়েছিলাম মাথা
দূরের রেডিও থেকে কে-যেন কথা বলেছিল কানে—
রাতের মরণে জন্ম নিয়েছে যে সকাল
তার ঘাড়ে কেন ফেলি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর শ্বাস?

নিজেকে ফিরে দেখতে ঘোরাতে হয়েছে স্মৃতি; খেলার ছলে
কারা বলেছিল ‘ট্রুথ অর ডেয়ার?’— তখনও ছিল সময়
নিজেকে ফিরে দেখার ছিল যথাযোগ্য সুযোগ—
তবে অপেক্ষাবিহীন কেই-বা পেয়েছে সাড়া?

সুকৌশলে তাই ঘুরিয়ে দিয়েছি বোতল…

মফঃস্বলে ঘোড়াগুলো

আমাদের ঘোড়াগুলো বাঁধা নাই আর
আস্তাবল ভেঙে তারা ছুটে গেছে, দূরে—
নদী বরাবর। যেখানে রয়েছে বালু, হাওয়া-চলাচল।
আমরা তো জানি, নদীতীরবর্তী যেকোনো প্রাণই স্বাধীন, উচ্ছৃঙ্খল।
আমাদের ঘোড়াগুলো—
আস্তাবল ভেঙে তারা দৌড়েছে, বহুদিন পর—
নদীবরাবর। আমরা তাদের পিছু নেই নি কেউ, কেননা
সেখানে রয়েছে মেঘ, অসামান্য বৃষ্টিজল।
আমরা তো জানি, নদীতীরবর্তী যেকোনো প্রাণই ধরাছোঁয়ার বাইরে।
আমাদের ঘোড়াগুলো কবিতা লেখে, থাকে মফস্বল…

সাদা দূরবীন

রোদ আসে আরও, আলোর আকাশ
বসে থাকি একা, তোমার পাশে।
তুমি সাদা-দূরবীন দিয়ে—
দ্যাখো মেঘ ভাসে, পাখি হাসে, আমার চোখে
আমি হাসি, জানালা খুলে বৃষ্টি দেখাই তোমাকে।

সেই জানালা প্রশ্ন করে: “কোন্ মেঘ ব্যক্তিগত?”
তাই স্মৃতির মেঘ হাসে ঐ অসীম আকাশ থেকে—
ফেলে আসা যত সবুজ দিনের ইশারায়। কিন্তু,

তুমি কই গেলা বলো? আরও তো থাকতে পারতা!
এখন, আমি তোমার সাথে কথা বলব না যেহেতু আর;
তাই সকল দৃশ্য চলে গেল অন্য কারও জানালায়।

আর সেই জানালা দিয়ে নেমে আসলো যেসব আকাশ—
সেসব আকাশ আমি দিতে গিয়ে উপহার,
ছোট হয়ে এসেছিলো হাতের মুঠো তোমার। তাই,

আমি এখনও হাসি, জানালা খুলে
বৃষ্টি দেখাই নিজেকে— তোমার-আমার।

রাজা চেক!

কবিতার দৌড় যেহেতু জানা আছে আমার
তাই তর্ক করাটা জরুরি নয় মোটেও— বরং
এই ফাঁকে আঁকা যেতে পারে
রাষ্ট্রের মুখে প্রশ্নবোধক পেইন্টিং।
তাতে যেটুকু হবে না বলে মনে হয়—
ওটুকুও আসলে হবার সম্ভাবনা রাখে।
সময় তা জানে। এবং জানায়।

কেবল গিটারটা বাদ দিলে রাষ্ট্র তো আমিও—
তাই প্রশ্ন তুলতে হবে আমাকেই। ওঁম…

“চোখের মধ্যে ঢুকে বসে থাকো যদি
(দেখবা)
গুম-খুন-যেন-এক প্রসারিত নদী…”

এর চেয়ে রোম্যান্টিক পদ্য,
আমি আমার প্রেমিকাকে বলতে পারি না বহুদিন।
তথাপি তার অভিযোগ— আমার প্রেমের নাকি ‘গায়েবী’ স্বভাব।

এদিকে,
কবিতার দৌড় আমি জানি দেখেই—
সিস্টেম আমাকে আদর ক’রে কবি ব’লে ডাকে।
তাই আমি এও জানি,
কতজন আদম, হয়ে গেলে হাওয়া—
গুম নিয়ে লেখা যায় আস্ত কবিতা, গান…

চুপ!
কথা বন্ধ!
চুপ করো তবে,

আমরা কেউ রাজা নই আর প্রজা নই ভবে।
কবিতার দৌড় যদি জানতে চাও তুমিও—
তবে চোখ-খুলে রাজা যিনি তার চোখ দ্যাখো,
তাকাও—
ভাবো কবিতাই তোমার চাল্ (অথবা গান কিংবা কথা অথবা ইত্যাদি),
আর তীব্র কণ্ঠে বলে ওঠো—

রাজা চেক! এখনই…

Painting by Tanshin Morimasa (1653-1718). Japan

অদ্বিত অদ্রি অনন্ত

তরুণ কবি। ঢাকার বাসিন্দা। ২০১৯ সালে প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়।

Share

1 thought on “মফঃস্বলে ঘোড়াগুলো ও অন্যান্য কবিতা”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top