।। কাজী ওয়ালী উল্লাহ।।
আমি জাহাজ নির্মাণের উপকূল পেরিয়ে, সীতাকুণ্ডের
পুরানা মন্দিরগুলাতে দাগ রেখে,
ঘোড়ার উপর ঘুমিয়ে পড়া শত শত সৈন্যদের স্মৃতির পাশ ঘেঁষে
হেটে চলেছি তোমার দিকে
তোমাদের গ্রাম তো অন্য এক শাসকের দেশ
এক দফা
হয়ত জবান নয়তো বোবা
এক দফা এক দফা
আজ মদিনা আজ কাবা
এক দফা এক দফা
হয়ত জীবন নয়ত ওফাত
এক দফা এক দফা
আজকে গাজা আজকে ঢাকা
এক দফা এক দফা
হে আবু সাইদ, মারহাবা!
এক দফা এক দফা
আজকে মিলাদ আজ ওজিফা
এক দফা এক দফা
হাশর নাশর, সওয়াল জবাব
এক দফা এক দফা
আজ মন্দির আজ প্যাগোডা
এক দফা এক দফা
স্বাধীন নবাব ডেকেছে সভা
এক দফা এক দফা
আজ পলাশী, কিন্তু জয়ের
এক দফা এক দফা
এই বৃষ্টি
এই বৃষ্টি কোনো অর্থই বহন করে না, আজাদি ছাড়া
যারা ভিজতেছিল রাস্তায়, তাদেরকে
এই বৃষ্টির বাতাস কেমন অনুভূতি দিয়ে গেছে আল্লা জানেন!
এই ফিলিং লেখা হবে
যেন তারা একেকটা ব্ল্যাক পার্লের নাবিক
রাস্তাগুলা সাগর, রাস্তাগুলা উপচানো ফেনা
যারা চায় ঢুকে পড়বে আজ, বইয়ের ডাল ছিঁড়া ইতিহাসের
এই বৃষ্টি কোনো অর্থই বহন করে না, ইতিহাস ছাড়া
ইতিহাস
যখন অর্থহীনতা ছড়িয়ে পড়ে,
বৃষ্টির ভিতর একটা সামুদ্রিক দ্বীপের ঘ্রাণ আমাকে টানে
একদিন এখানকার আকাশ ছেয়ে গিয়েছিল আরব্য বণিকদের রুমালে
আমার অনুভবের ভিতর তাদের ফর্সা রোম,
পর্তুগিজ জলদস্যুদের নিজস্ব ভাষা
আর ব্রিটিশের প্রথম নোঙরধ্বনি
আমরা আরও এক জলদস্যুর কবলে পড়েছি
এগিয়ে যাচ্ছি আরো দীর্ঘ উপনিবেশের দিকে
তোমাকে পাবার পথে আজ দুইশ বছরেরও অধিক দূরত্ব
তোমার গলার নরম রগগুলা ফুলে উঠছে কান্নায়
যেভাবে বন্দরের কাছাকাছি জাহাজ ছড়িয়ে থাকে
তোমার পূর্বপুরুষও কি এই নগরে বাণিজ্য করতে এসেছে একদিন?
আমি জাহাজ নির্মাণের উপকূল পেরিয়ে, সীতাকুণ্ডের
পুরানা মন্দিরগুলাতে দাগ রেখে,
ঘোড়ার উপর ঘুমিয়ে পড়া শত শত সৈন্যদের স্মৃতির পাশ ঘেঁষে
হেটে চলেছি তোমার দিকে
তোমাদের গ্রাম তো অন্য এক শাসকের দেশ
সবুজ রঙের ধূলি
পড়ে আছে মন তোমার ভিতর
তুমিও মনের দিকে
পাখিটা পালাল ঘুমের ঘোরে
পাতাকে নড়তে দেখে
গুঁড়ি থেকে ধান খুঁজে মরছিল
তোমার মোরগগুলি
চৈত্রমাসের পত্রে তখন
সবুজ রঙের ধূলি
জরিদার রোদ বিগলিত হল
ডুবে যেতে যেতে কূলে
সন্ধা এলাল সদ্য তোমার
কেটে যাওয়া আঙুলে
আমি যে এসেছি বুঝতে পারোনি
উঠানে কাউকে দেখে?
ঋতু কাছে এলে ফলেরই স্বভাব
লাল হয়ে যাওয়া পেকে
কাজী ওয়ালী উল্লাহ
জন্ম ২০০০ সালে, চিটাগাং জেলার গ্রামের দিকে। বর্তমানে চিটাগাং শহরেই বাস করেন, পড়াশোনাও একই শহরে। বছরের বেশির ভাগ সময় কাটে মাদ্রাসার হোস্টেলে আর ক্লাসে। ফোনে ইন্সটল করা একটা অ্যাপ, আর একাডেমিক পড়াশোনার জন্য দিস্তা মেপে কেনা খাতাতে কবিতা লেখেন।