গান্ধারীর মিথ্যে অন্ধত্বের দিকে

।। পায়েল দেব ।।

এসো আমাকে ধারণ করো, ধরো আমি কোনও কাহিনীর সুতো, উড়ন্ত বেলুনের ভেতর গত জন্মের সঙ্গম নিয়ে দরজায় দরজায় জিরিয়ে নিচ্ছে আমার অবসাদ

গান্ধারীর মিথ্যে অন্ধত্বের দিকে

হাৎর্জ

নদীর ভেতরে দিন পেরিয়ে, সূর্যাস্ত পেরিয়ে, টের পাই বুকের দুটি স্তন আশ্চর্য নরম, তাদের সঞ্চারপথে আবিষ্ট হয়ে আছে প্রথম ঋতুর মত মর্মের অসুখ।এক দীর্ঘস্থায়ী তীব্র কম্পনে আমরা অনুনাদিত হয়ে চলেছি আজীবন

ফোটন

দ্বৈত হয়ে আছ বলে, ধর্মের পাপ তোমার লাগেনি

এসো আমাকে ধারণ করো, ধরো আমি কোনও কাহিনীর সুতো, উড়ন্ত বেলুনের ভেতর গত জন্মের সঙ্গম নিয়ে দরজায় দরজায় জিরিয়ে নিচ্ছে আমার অবসাদ, বিনিময়ে একটি জোনাকি নয় প্রজাপতি রেখে দাও

উড়ে যায় শত শত মায়ার সন্তান, গান্ধারীর মিথ্যে অন্ধত্বের দিকে

সিউডো

নাগরদোলা ঘুরছে অনন্ত ব্রহ্মাণ্ডের ভেতর, স্পর্শক বরাবর ছুটে আসছে ছোটো ছোটো ঢিল,পেঁয়াজকলি, আহা, দারুণ রঙের জামা পরে ঠায় চেয়ে আছো আমার দিকে, আমি বিন্দুমাত্র হয়ে যাচ্ছি চক্রাকারে, লুফে নিচ্ছ সোজা নেমে আসা কলিটি। অসহ্য যন্ত্রণায় আলাদা হয়ে যাচ্ছে আমার অলিন্দ-নিলয়, তুমি ধরতে পারছ না কোনও তেজ, এমনকি আমার বিন্দুটিকেও

এমন খিলখিলিয়ে ওঠা জীবন দেখে কেঁদে ফেলেছিল গোটা সার্কাস

ডপলার

আমি বলেছি সীতা তুমি বলেছ তাসী অথবা তুমি রাম আমি মরা- এসব খেলে খেলে শৈশব ঢুকেছিল কৈশোরে, এলো প্রেম ছুঁয়ে বিচ্ছেদ। একদিন অপেক্ষা ছিন্নভিন্ন করে ঢুকল রাজধানী এক্সপ্রেস, তার সাঁইসাঁই, নামের অক্ষরগুলোকে একে একে উল্টো গেঁথে দিল সুতোয়।

পেরিয়ে গেলে আমাকে, ট্র্যাকে কান পাতলে আজও আমাদের আপেক্ষিক গতি কমে আসে

সমমেল

আসন্ন সমারোহে ঢুকে গেছে মহামারী, বিবাহের ধুন শ্রুতিমধুর মনে হয় কি আর? সানাই, তার ডুকরে কেঁদে ওঠার অভ্যেস, বিরক্তি আনে। পাখিদের সংসার কখনোই ভালোবাসার দিকে যায় না, উড়ে যায়, রাতে অজস্র ডানার পতপত লেগে থাকে

গুণলে হারিয়ে যায় গুটিকয়েক যুগ্ম-অযুগ্ম কেঁপে ওঠা, বেসুরো সব, আঠালো সকালের গায়ে লেখা থাকে আঁধারের সীমাস্থ মান।

ছবি- লুবনা চর্যা

পায়েল দেব

পায়েল দেব

ত্রিপুরার কবি। জন্ম-১৯৮৭ সালের ২৭ শে জুলাই। পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ও শিক্ষাবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর। পেশা- ত্রিপুরা সরকারের অধীনে বিজ্ঞান শিক্ষিকা। প্রথম কাব্যগ্রন্থ – কুয়াশার সানস্ক্রিন (২০১৭)। অন্য কাব্যগ্রন্থগুলো হল – গাছের গোপন অসুখ( ২০১৯), স্কেচবুক( একফর্মা, ২০১৯), নিমফুল(২০২০), জমান্ধ পংক্তিমালা(একফর্মা,২০২১)।

Share