কথাসাহিত্যের আপন ও পর

এই লেখাটি মাহবুব মোর্শেদ নয়াকৃষি আন্দোলনের রিদয়পুর বিদ্যাঘরে অনুষ্ঠিত ‘রিদয়পুর সাহিত্য আড্ডা ২০১৪’ সম্মেলনে পেশ করেছিলেন। বলা বাহুল্য, ‘প্রতিপক্ষ’ সামাজিক-ঐতিহাসিক ভাবে এবং চেতনা বা সাংস্কৃতিক মেরুকরণের দিক থেকে ‘ভদ্রলোক’ বা সাহেবসুবাদের বিপরীতে ‘ছোট লোক’ বা চাষা-ভূষা-মজুর-মুটে-কারিগর সহ সমাজের একদমই নীচের প্রান্তে পড়ে থাকা মানুষদের প্রতি পক্ষপাতী। কিন্তু তাদের জীবন নিয়ে লিখবার কি অধিকার আছে আমাদের? কিম্বা ধরা যাক দলিতদের নিয়ে বামুনের লেখার অধিকার কতোটুকু, সর্বহারার জীবন নিয়ে বুর্জোয়ার, কিম্বা আতরাফদের নিয়ে আশরাফদের সাহিত্য চর্চা ? আরও জটিল এবং অনেক তলার জিজ্ঞাসা, মেয়েদের জীবন নিয়ে ছেলেদের সাহিত্য? এই তর্কটা আমরা আরও চালাতে চাই। পাঠক আপনিও নতুন লেখা লিখে পাঠান কিম্বা কমেন্টে মন্তব্য করুন। – সম্পাদনা বিভাগ।

।। মাহবুব মোর্শেদ।।

১।। কয়েক বছর আগে একটা মজার লেখা খুঁজে পেলাম নিউ ইয়র্ক টাইমসে।  ওরা ‘ড্রাফট’ নামে একটা বিভাগ চালু করেছিল।  লেখকরা লেখা বিষয়ে নানা অভিজ্ঞতা ও মত তুলে ধরেন এই বিভাগে।  ওখানেই রোক্সানা রবিনসন [১] ‘লেখার অধিকার’ (The Right to Write) নামে একটা লেখা লিখেছেন।  বিষয়টা আগে আমি নানাভাবে লেখক বন্ধুদের সাথে কথা বলেছি।  খুব যে সাড়া পেয়েছি তা নয়।  সাড়া পাইনি বলেই, আপনাদের সামনে তর্কটা নিয়ে আবার উপস্থিত হলাম।  বলতে গেলে এ নিয়ে আমাদের দেশে প্রচলিত ধারণাটা একরকম স্বতঃসিদ্ধ।  

ফিকশন লেখকদের মধ্যে অধিকাংশই মধ্যশ্রেণী থেকে আসা।  আমাদের দেশে যেমন দেশের বাইরেও তেমন।  কিন্তু একটা স্বতঃসিদ্ধ ধারণা এখানে ‘কীভাবে যেন’ চালু হয়ে গেছে- মধ্যশ্রেণীর বাইরের বিষয় নিয়ে লেখা কথাসাহিত্যই ভাল বা মহান। মধ্যশ্রেণীর লেখকদের অপর উচ্চবিত্ত শ্রেণী বা নিম্নবিত্তশ্রেণী।  কিন্তু উচ্চশ্রেণী নিয়ে খুব বেশি লেখার দেখা আমরা পাই না।  কিন্তু নিম্নবিত্ত শ্রেণী নিয়ে লেখার অভাব নাই।  কীভাবে এমন হলো? লেখকরা কেন নিম্ন শ্রেণী ও বর্গের জীবনকে সহজগম্য ভাবলেন? নিম্ন শ্রেণী লেখা তাদের বিশেষ দায়িত্ব বলে মনে করলেন? আবার এ বিষয়ে লেখাকে স্বতঃসিদ্ধভাবে মহান বলে ভাবতে শুরু করলেন?

এসব প্রশ্নের উত্তর নানাভাবে খোঁজার চেষ্টা হতে পারে।  আমি একভাবে উত্তর খোঁজার চেষ্টা করি। আমাদের রাজনীতিতে মার্কসবাদের ফলন ততো ভাল না হলেও বাংলাসাহিত্যে মার্কসবাদের ফলন বেশ ভাল।  আমার মতে, মার্কসবাদী সাহিত্য ও নন্দনতত্ত্বের এক অমোচনীয় প্রভাব বাংলাসাহিত্যে পড়েছে এবং সাহিত্যকে ছকবাঁধা এমন একটি চক্রে আটকে ফেলেছে যা থেকে সাহিত্য বের হতে পারছে না।  বহুবছরের চর্চায় এটি এতটা গভীরে শেকড় ছড়িয়েছে যে, একজন বুর্জোয়া তরুণও অতিসহজে এর দ্বারা আক্রান্ত হয়ে পড়েন।  লিখতে শুরু করলেই গরিবদরদী, বিপ্লবী বা উন্নয়নকামী হয়ে পড়েন। সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হলো, লেখকরা কোনো মতাদর্শ দিয়ে ঢাকা পড়ছেন এ বিষয়ে একদমই সচেতন নন।  হয়তো এ কারণেই, আমাদের লেখালেখির বড় একটি অংশ নিম্নবর্গের জীবন নিয়ে। নতুন যারা লিখছেন তারা আগের লেখার ধারাবাহিকতায় যখন লিখতে বসেন তখন হয়তো নিজের মুখ না ভেসে কোনো গরিব চাষীর মুখ, সংগ্রামরত শ্রমিকের মুখ, আদিবাসী জীবন ইত্যাদি তার চোখে আগে লিখনযোগ্য ও প্রেরণাময় মনে হয়। নয়তো, ইতিহাসের দিকে চলে যাওয়া।  কোনো প্রান্তিক আচার বা চর্চা নিয়ে লেখা।  এসব আমাদের কথাসাহিত্যের সাধারণ বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা উদ্বেগের।  কেননা, যে কথাসাহিত্য নিজেকে সিরিয়াস বলে দাবি করে দেখতে পাচ্ছি তা নিজের, নিজের শ্রেণী বা বর্গের সামনে দাঁড়াতে পারছে না।  নিজেকে নিয়ে লিখতে পারছে না।  ফলে, পাঠকের (মূলত মধ্যশ্রেণীর) সাথে তার সংযোগ তৈরি হচ্ছে না। আমাদের জনপ্রিয় সাহিত্যের গতিবিধির দিকে খেয়াল করলে দেখা যাবে-জনপ্রিয় হয়েছে কিন্তু উপন্যাসের চরিত্ররা মধ্যবিত্ত শ্রেণী থেকে আসেনি এটা হতেই পারে না। কিছু ব্যতিক্রম থাকতেই পারে। কিন্তু জনপ্রিয় উপন্যাসগুলোর তালিকা করলে অধিকাংশের বিষয় হিসেবে মধ্যশ্রেণীকে খুঁজে পাওয়া যাবে।  জনপ্রিয় উপন্যাস মধ্যশ্রেণীকে বাস্তবতার সামনে নাকি ফ্যান্টাসির সামনে নিয়ে গেছে সে তর্ক উঠতে পারে।  কিন্তু সিরিয়াস উপন্যাস যে মোটাদাগে মধ্যশ্রেণীর সঙ্গে সংযোগ তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে সেটা হয়তো বলা যায়।  নিজের মুখোমুখি হতে না পেরে, নিজেকে বা নিজের শ্রেণীকে বা নিজের পরিমণ্ডলকে উপন্যাসিত করতে না পেরে আমাদের কথাসাহিত্য যেভাবে প্রান্তের দিকে আগ্রহী হয়েছে তাকে আমরা কী বলবো? সাহিত্যিকের পেটিবুর্জোয়া প্রবণতা, পলায়নপরতা অথবা অন্যকিছু? সহসাহিত্যিকদের আড্ডায় এসব তর্ক তুললে কেউ কেউ বলেছেন, তাহলে তুমি পদ্মানদীর মাঝিকে কী বলবে? হাঁসুলিবাঁকের উপকথাকে কী বলবে? চিলেকোঠার সেপাইকে কী বলবে? এসব প্রশ্নের মানে হলো, সাহিত্যের সব সফল উপন্যাসেই তো নিম্নশ্রেণীর জীবনকথাই দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।  আর সেগুলোর বেশিরভাগই মার্কসবাদী আদর্শে অনুপ্রাণিত। এখানে মুশকিল হয়।  বাংলাসাহিত্যের অধ্যাপকরা যে উপন্যাসগুলোকে সাহিত্যের উপন্যাসের ধারাবাহিকতায় পরপর সাজিয়েছেন সেগুলা তো এরকমই।  কিন্তু অন্যদেশের সাহিত্যেও কি এরকম ঘটেছে? মার্কেজ কি নিজের শ্রেণীর বাইরে গিয়ে গরিব-দুঃখিদের নিয়ে লিখেছেন? গুন্টার গ্রাস? নাগিব মাহফুজ? আমোস টুটুঅলা? তলস্তয়, দস্তয়েভস্কি, চেখভ, বালজাক?

রোক্সানা রবিনসন উপন্যাস লিখে থাকেন। মার্কিন। দুই হাজার আট সালে তাঁর লেখা উপন্যাস ‘Cost’ খুব নাম দাপায়। ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’ দাবি করে ওটি সেই বছরে প্রকাশ পাওয়া পাঁচটা উপন্যাসের মধ্যে একটা। অবশ্য মেইনস্ট্রিম মার্কিন সাহিত্য বিচারে। কিন্তু নিউ ইয়র্ক টাইমসে যে তর্ক তিনি তুলেছিলেন, সেটা যে কোন দেশের জন্য প্রাসঙ্গিক। এই তর্কে আমাদের আগ্রহ আছে। মাহবুব মোর্শেদ প্রতিপক্ষের জন্য তর্কটি প্রাসঙ্গিক করে তুলেছেনসম্পাদনা বিভাগ
।। ২।।

রোক্সানা রবিনসন একটা মজার অভিজ্ঞতা দিয়ে লেখা শুরু করেছেন।  একবার এক আলোচনায় তার সাথে ছিলেন আরেক ঔপন্যাসিক ও একজন আফ্রোঅ্যামেরিকান সমালোচক।  আলোচনায় এক পর্যায়ে সমালোচক বললেন, একজন শাদাচামড়ার নারী হিসেবে হেরিয়েট বিচার স্টোর আঙ্কল টমস কেবিন লেখার কোনো অধিকার নাই।  সাথে সাথে ঔপন্যাসিক বাঁকাস্বরে বললেন, না নাই।  আমারও অধিকার নাই ১৪ শতকের স্ক্যান্ডিনেভিয়া নিয়ে লেখার।  কার তাহলে কোনটা নিয়ে লেখার অধিকার আছে? রোক্সানার অবস্থান কিছুটা মাঝামাঝি। কোনো বিষয় নিয়ে লিখতে গেলে লেখককে সেই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হবে এমন নয়।  তবে লেখক যা নিয়ে লিখছেন সে সম্পর্কে তার পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকতে হবে।  ঔপন্যাসিকরা পৃথিবীকে পর্যবেক্ষণ করছেন, মানবিক অভিজ্ঞতাগুলোকে যাচাই করছেন।  এরমধ্য দিয়ে তারা অনেক কিছুর সাথেই সংযুক্ত।  একটা সহাবস্থান ও সহানুভূতির মনোভাব নিয়ে তারা যা নিয়ে লিখছেন তার সাথে হয়তো অনেকটাই যুক্ত। এটা প্রদর্শনকামীতা নয়।  তারা নিজেদের অভিজ্ঞতার বাইরের একটা বিষয়কে কীভাবে দেখছেন সেটাই তো লিখছেন।  তিনি শেক্সপিয়ারের উদাহরণ দিয়েছেন।  কিন্তু একটা ব্যাপার উল্লেখ করেননি যে রাজা, রাণী, ভৃত্য, রাজকুমারদের মুখে কথা বসানো আর উপন্যাসের মাধ্যমে পুরো দরবারের জীবনছবি হাজির করাটা এক নয়।  বরং তলস্তয়ের যে উদাহরণ তিনি দিয়েছেন তা আমার মনে ধরেছে।  আন্না কারেনিনা উপন্যাসটির চরিত্রেরা তলস্তয়ের নিজের বর্গেরই।  উপন্যাসে একজন নারী তার স্বামীকে রেখে প্রেমিকের হাত ধরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান।  পরে প্রেমিকের দ্বারা প্রতারিত হয়ে নিজেকে রেললাইনের নিচে নিক্ষেপ করেন।  রোক্সানা লিখছেন, এরকম একটা ঘটনা তলস্তয়ের নিজের বোনের বেলাতেই ঘটেছে।  একটি সম্পর্কের কারণে তার বোন সন্তানের মা হয়েছিলেন।  কিন্তু বাচ্চার বাবা তাকে বিয়ে না করে অন্য একজনকে বিয়ে করে। বোন এ নিয়ে একটা চিঠি লেখেন ভাই তলস্তয়কে। তা তে বোন ছিলেন চরম হতাশ এবং আত্মঘাতি প্রবণতায় আক্রান্ত।  তলস্তয়ের এই উপন্যাস কি তাহলে অপরের অভিজ্ঞতা? তিনি কি অপরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন? নাকি তলস্তয় এ ঘটনা দিয়ে যেভাবে প্রভাবিত ও তাড়িত হয়েছিলেন তার ফল এটি? বোনের অভিজ্ঞতাকে নিজের দিক থেকে যেভাবে তিনি দেখেছিলেন সেখান থেকেই আন্না কারেনিনা লেখা হয়ে থাকবে।  তাহলে অপর জেন্ডারের অভিজ্ঞতাকে যখন আমরা ব্যত্যয় ধরছি না তখন অপর বর্গ বা শ্রেণীর অভিজ্ঞতাকে কেন গুরুতর ব্যত্যয় হিসেবে আলোচনা করতে চাইছি?

।। ৩ ।।

একটা কথা মানতেই হবে, অপরের অবলম্বন ফিকশন লেখককে মেনে নিতেই হবে। নিজের যাপিত জীবন যদি লেখকের একমাত্র অবলম্বন হয় তবে, তাকে লিখতে হবে খুব সামান্য অথবা যাপনকে ভয়াবহ মাত্রায় প্রসারিত করতে হবে। কিন্তু লেখকদের একটা অনন্য গুণ আছে, যে কারণটির জন্যও হয়তো তারা লেখক। সেটি হলো, নিজের জীবনে থেকেও তারা অন্যের জীবন যাপন করতে পারেন। এক তীব্র সংবেদনশীলতা তাদের অপরের সুখ, ব্যথা, বেদনাকে অনুভব করতে, জানতে ও উপস্থাপন করতে শেখায়। উপন্যাসে যখন কোনো ঘটনাকে ভাষা, বর্ণনা ও ঘটনাবলীর সাহায্যে উপস্থাপন করেন তখন বাস্তবতাকে এমনভাবে উপন্যাসিত করেন যে বাস্তবতার মূল ঘটনাটি আর ফ্যাক্টর থাকে না। নতুন বাস্তবতা তৈরি হয়। সেখানে লেখক সবার দিক থেকে লেখার একটা সার্বিক অধিকার পেয়ে যান। এজন্য লেখককে একটা বিরাট প্রস্তুতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সংবেদনশীল যে প্রস্তুতির মধ্য দিয়ে লেখক অনেক কিছু জানেন তা-ই হয়তো লেখক জীবন। একথা হয়তো কেউ অস্বীকার করবেন না- লেখক যা লিখবেন তা তাকে জানতে হবে। তার দখলে থাকতে হবে। কতটা জানতে হবে? একজন রিপোর্টার একটি ঘটনা নিয়ে সংবাদপত্রে লিখতে গিয়ে যতটুকু জানার চেষ্টা করেন ততটুকু? একজন এনজিও কর্মী উন্নয়নকর্ম করতে গিয়ে যতটুকু মাঠ গবেষণা করেন ততটুকু? কিংবা একজন গবেষক গবেষণার জন্য যতটুকু তথ্য-উপাত্ত জোগাড় করেন ততটুকু? এর চেয়ে কম না বেশি? একজন রিপোর্টার, উন্নয়নকর্মী ও গবেষকের চেয়ে লেখকের কাজ আলাদা। লেখককে একটা বাস্তবতার নিরিখে নতুন বাস্তবতা নির্মাণ করতে হয়। তাতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করতে হয়। কিন্তু আমরা অনেক উপন্যাসই বাংলাভাষায় পাই যা হয়তো প্রতিবেদন বা গবেষণার বেশি কিছু নয়। লেখক হয়তো লেখার বিষয় নিয়ে জানেন। কিন্তু তিনি নিজেকে এর সঙ্গে যুক্ত করতে পারেন না। আত্মস্থ করতে পারেন না। আগেই বলেছি তিনি একধরনের মার্কসীয় কল্যাণবোধ থেকেই হয়তো এটি করেন। হয়তো ‘উন্নয়ন’ ধারণার বশবর্তী হয়ে করেন। এবং প্রশংসিতও হন খুব অসাহিত্যিক কারণে। কিন্তু তাতে আরেকটি ব্যর্থ উপন্যাস ছাড়া তালিকায় আর কিছু যুক্ত হয় না। আজকাল অনেক ঐতিহাসিক উপন্যাসেরও দেখা মেলে। সাহিত্যিক পলায়নপরতার আরেক নিদর্শন এই ঐতিহাসিক উপন্যাস। বাজারচলতি যে ডিসকোর্স তাকে কোনোভাবে বিচলিত না করে, কোনোভাবে প্রশ্ন না করে, ভিন্ন জায়গা থেকে দেখার চেষ্টা না করে কীভাবে উপন্যাস লেখা সম্ভব? অনেক উপন্যাস দেখি, ঐতিহাসিক উপন্যাস হিসেবে খ্যাতি পাচ্ছে কিন্তু তাতে ইতিহাস কিছু থাকলেও উপন্যাস বলতে কিছু নেই। ইতিহাসের পুনর্নিমাণ হচ্ছে। উপন্যাস হচ্ছে না। কেননা যে ইতিহাসের মধ্য দিয়ে স্বয়ং না গেছেন সে ইতিহাস তো অপর। সে ইতিহাস যাপনের মতো সংবেদনশীল চেষ্টা লেখকের মধ্যে নেই। ফলে, বৃথা কিছু চেষ্টাকে আমরা প্রশংসা করে যাচ্ছি। যেগুলো বিষয় নির্বাচনের গুণেই শুধু প্রশংসিত হচ্ছে বা মনোযোগ পাচ্ছে। অন্যদিকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ, জনসমাজে প্রভাবশালী ফিকশনকে আমরা ব্যাখ্যা করতে পারছি না। অন্যদিকে বিশাল মধ্যশ্রেণীর বিচিত্র জীবন ও জীবন অভিজ্ঞতার পদচিহ্ন কথাসাহিত্যে অধরাই থেকে যাচ্ছে।

Share