অথবা গাধার যান্ত্রিকতা

।। প্রত্যুষ বন্দ্যোপাধ্যায় ।।

কথিত গাধার মেধা অথবা গাধার যান্ত্রিকতা এই
নিয়ে রোজ খবরের কাগজ পড়ো তুমি রোজ
গাধাটার সাথেই বাতকম্ম করো
পরশু হয়নি আজ তো হচ্ছে না
কালও কী হবে না
হে মাধবী দ্বিধা কেন এসো
ক্যামেরা বাঁচিয়ে খুলি ওয়ো-ঘর তালা

অথবা গাধার যান্ত্রিকতা

শাশ্বত গাজর

কবিতা তুমি যেন  শাশ্বত গাজর
আমি গাধা
ল্যাগবেগে উজিয়ে চলেছি

সেই কবে থেকে
আমার আগেও সেই কত কতজন
ছিল মানে আছে হয়ে
ছিল মানে নেই হয়ে
রয়ে গেছে

রোজ দেখা হয়

বাজার ফেরার পথ
বাড়ির ফেরার পথ
ফেরারী ফেরার পথ

বেঁকে গেছে

আর সেই দুরূহ বাঁকের তীব্রতম কোণে
কেউ যেন কে যেন
আছি মানে আছি হয়ে
আছি মানে নেই হয়ে

কবিতা যেমন তুমি শাশ্বত গাজর
আমিও ঢ্যামনাচোদা গাধা
হ্যাঁ হ্যাঁ না না তানানানা
গুঙরে চলেছি

হে উন্নয়ন

ইয়ে মানে কলকাতার নিচে একটি আস্ত সিলিকন ভ্যালি পাওয়া গেলেও কি উচ্ছেদের মুরোদ দেখাতে পারবেন হে উন্নয়ন যত সহজে জলজঙ্গলে বুলডোজার চলে যতখানি বাধ্য করা যায় মধ্যবিত্ত মেধা লিপিঅক্ষরের গ্রাম্ভারি ব্যাকরণ চাপিয়ে দিয়ে যতখানি ঢপ মারা যায় সেই সাপ জ্যান্ত গোটা দুই আনলেই চলবে কেননা ঢোঁড়াগুলো শুধু তৎসম বক্তৃতা জানে ঠোঁট নড়ে অন্যদিকে ফিসফিস কানেকান যেন বাদল সরকারের সাগিনা সাগিনা
সংকেত ঝলসে ওঠে

হে উন্নয়ন জো উন্নয়ন এবারেও হাজিরা দিতে পারলাম না নিজ দোষে ইয়ে করবেন

আহা কী নরম

নরম নরম কবিতা খরগোশের গলা কেটে
দেখতে ইচ্ছে হয়
ভেতরের রক্তটা গরম তো

সবকিছু নিয়ে কথা হচ্ছে
পেটটাকে বাদ রেখে
ধর্মের প্রকৃত সই সেজে সই দেওয়ার কী ধুম

তবে কি প্রতিবেশী-বোধের  ভিতরেই ঢুকে আছে
আমাদের বাড়ি আর ওদের বাড়ি

এরই সাথে সাথে খুনগুলো  হয়ে চলে
ঘর পোড়ে

মড়ার বরফ নিয়ে শেষ পেগ মেরে দিতে
বন্ধুদের সাথে নিয়ে আমি ভিড় করি
কদম্ববৃক্ষে নাচে উট আর চাঁদ

তারপর রাত আর নখের প্রহর

বরং ভেদবমি করেই মরে যেও তুমি
কৃকলাস ব্যাধি এসে ঝাঁঝরা করে দিক
তবুও দুয়ারে যেও না
কানে কানে এই কথা কে যে বলে
মিলিয়ে গেছিল
কুয়াশার রহিম ওস্তাগর লেন
অল্পদূরে ভেসে ছিল নিয়ন বেলুন

কথিত গাধার মেধা অথবা গাধার যান্ত্রিকতা এই
নিয়ে রোজ খবরের কাগজ পড়ো তুমি রোজ
গাধাটার সাথেই বাতকম্ম করো
পরশু হয়নি আজ তো হচ্ছে না
কালও কী হবে না
হে মাধবী দ্বিধা কেন এসো
ক্যামেরা বাঁচিয়ে খুলি ওয়ো-ঘর তালা

যতরকম সম্ভব গরল ও কফে
বিষ্ঠা ও প্ল্যাসটিকে
সারসংক্ষেপে
তুমি যে আদতে একটা মা কা ভোগ মাল
পয়মাল বুঝে গেছ

সীমান্তে শ্মশান জ্বালে
                       গোরস্তানে ফুলচোর স্মৃতি

এরকম লাইন লেখাই যদি উদ্দেশ্য হয়
তাহলে বিধেয় নিয়ে
তুমি ফুটে যাও

সুপারী

খুঁত আর নিখুঁত নিয়ে চাঁদের সাথে প্রথমে তর্ক
তারপর ডিরেক্ট বাওয়াল

শেষকালে যখন বললাম
খুঁত সুন্দর হবেই তো
চন্দ্রবিন্দু আছে যে

আসলে আমিও একটু কান্নিক মেরে বলেছিলাম

আর চাঁদ তেড়েফুঁড়ে জোছনা নামিয়ে
বলে তামাক খেয়েছ

ঐ দ্যাখো
গাঁজাতেও বিরাজমান সেই চন্দ্রবিন্দু

গম্ভীর খিল্লি যেরকম হয় আর কী

ব্যস আর যায় কোথায়

ফলে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে
চাঁদ সুপারী দিয়েছে

প্রত্যুষ বন্দ্যোপাধ্যায়

জন্ম ১৯৬০, নিবাস, পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা, ভবানীপুর। স্বাক্ষর। সম্পাদিত পত্রিকা – শব্দ, ক্যানেস্তারা। প্রকাশিত কবিতার বই – অব্যয় সংহিতা (ধানসিড়ি) ‘ক্যাজুয়াল স্বৈরতন্ত্রী (অক্ষরযাত্রা)। প্রকাশিতব্য, ‘চালচিত্র’ (অক্ষর যাত্রা)

Share